এই মুহূর্তে কলকাতা

আসন্ন উৎসবের মরসুমে রাজ্যের চা বাগিচা শ্রমিকরা কুড়ি শতাংশ হারে বোনাস পাবেন।

কলকাতা , ১৯ সেপ্টেম্বর:- চলতি বছরে আসন্ন উৎসবের মরসুমে রাজ্যের চা বাগিচা শ্রমিকরা কুড়ি শতাংশ হারে বোনাস পাবেন। গত কাল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে চা বাগিচা মালিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে রাজ্য সরকারের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী সাত অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকদের বোনাস মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দেশে আনলক পর্ব শুরু হতে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি মেনে চা-বাগান খুলে দেওয়ার কথা জানায় কেন্দ্র। কিন্তু তার আগে মাস ৩-৪ বাগান বন্ধ থাকার জেরে লোকসানের কথা শুনিয়ে বাগান মালিকেরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বছর বোনাস না দেওয়ার। সেই জায়গায় হস্তক্ষেপ করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকেই আর্জি জানিয়েছিলেন যাতে এবারেও বোনার থেকে চা-বাগানের শ্রমিকেরা বঞ্চিত না হোন। সেই আর্জি রাখলেন বাগান মালিকেরা। কনসাল্টেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে চলতি বছরে বাগানের শ্রমিকেরা ২০ শতাংশ হারেই বোনাস পাবেন।

লকডাউনের জেরে পাহাড় ও ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে প্রায় ৩-৪ মাস কোনও কাজ হয়নি। বিশেষ করে বিদেশের বাজারে চা পাঠানোর প্রক্রিয়া পুরো থমকে যাওয়ায় লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে বাগান মালিকদের। তাই বেশ কিছু বাগান মালিকেরা জানিয়েছিলেন এই বছর তাঁরা বোনাস দিতে অপারগ। তা নিয়ে আবার অসন্তোষ জেগেছিল বাগান কর্মচারীদের মধ্যে। ক্ষোভ ছড়িয়েছিল শ্রমিকদের মধ্যেও। বিশেষ করে লকডাউনের মধ্যেও লাভের মুখ দেখা বাগানগুলি কেন বোনাস দেবে না বা দিতে পারবে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দেন চা-বাগানে বোনাসের বিষয়টি নিয়ে বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে। এরপরেই গত ১৪ সেপ্টেম্বর কনসাল্টেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশনের এক বৈঠকে বোনার নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়ে। যদিও সেখানে সেদিন চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

এরপর গতকাল ফের বৈঠক বসে। সেখানেই জানানো হয় লাভের মুখ দেখা বাগানগুলিতে ২০ শতাংশ হারে চা-শ্রমিকদের বোনার দেওয়া হবে। গতবছরের তুলনায় বোনাসের এই হার দেড় শতাংশ বেশি। কিন্তু ক্ষুদ্র ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন চা-বাগানগুলির বোনাস নিয়ে জটিলতা এখনও রয়েছে গিয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে অন্তত গত বছরের হারেও যাতে সেখানে বোনাস পান চা-শ্রমিকেরা। তবে সামগ্রিক ভাবে ৫০টি চা-বাগানের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে যার মধ্যে গোটা ৪০ চা-বাগান আবার ডুয়ার্সে। চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁদের বাগানের শ্রমিকদের যাতে গতবারের ১৮.৫ শতাংশ হারেই বোনাস দেওয়া যায়। চলতি মাসের শেষ দিকেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সামনের মাসে বোনার পেতে সমস্যা হবে না চা-শ্রমিকদের।