এই মুহূর্তে কলকাতা

প্রয়াত সোমেন মিত্র , রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া।


সোজাসাপটা ডেস্ক , ৩০ জুলাই:- বুধবার গভীর রাতে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে জীবনাবসান হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর । ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত শিয়ালদহের বিধায়ক ছিলেন সোমেনবাবু । বাংলার রাজনীতি জগত থেকে একজন সজ্জন মানুষ বিদায় নিলেন । কংগ্রেস রাজনীতিতে ‘ছোড়দা’ বলেই পরিচিত ছিলেন সোমেন মিত্র। তিনি বর্তমানে লুপ্ত হয়ে যাওয়া শিয়ালদা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দীর্ঘসময়ের বিধায়ক ছিলেন । পরে কংগ্রেসের সঙ্গে মতান্তর হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান। এরপর ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূলের টিকিটে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে সাংসদ হন। এরপর ২০১৪ সালে তৃণমূল ছেড়ে তিনি ফিরে আসেন প্রদেশ কংগ্রেসে । এরপর প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব আসে আসে তাঁর কাঁধে। সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তিনি টুইট করে জানান , ‘এই দুঃসময়ে আমি সোমেন মিত্রের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাই।

সোমেনবাবুর প্রতি আমাদের ভালোবাসা চিরকাল থাকবে’। লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর কথায, ‘সোমেনদা আর নেই সেটা ভাবতেই পারছি না। বাংলার রাজনীতির একটা অধ্যায়ের শেষ হল। আমার রাজনৈতিক অভিভাবক , আমাকে জনপ্রতিনিধি করার মূল কারিগর সোমেনদাকে হারিয়ে আমি বেদনাহত’। তাঁর মতো সংগঠক কংগ্রেস রাজনীতিতে বিরল এই ভাবেই সোমেন মিত্রের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী । তিনি বলেন সোমেনবাবু ছিলেন বড় মাপের মানুষ । যখন আমাদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল তখনও এবং যখন আমাদের সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন তখন আমি দেখেছি তার সেই বড় মাপের পরিচয় । যখন আমরা ছাত্র রাজনীতি করতাম তখন থেকে আমরা সোমেন দাকে চিনি , বাংলার রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে তার পরিচয় ছিল। আজকে তাঁর প্রয়ান নিঃসন্দেহে পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হলো।

সোমেন মিত্রের প্রয়াণে শোক ব্যক্ত করতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল মান্নান বলেন সোমেন দার কাছে কর্মীরা কর্মী ছিলেন না ছিলেন নিজের ছোট ভাইদের মতো । মান্নান সাহেব জানান সোমেন বাবুর মত একজন নেতাকেও তিনি দেখেছিলেন তিনি হলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি , দলের কর্মীরা ছিলেন তাদের কাছে সম্পদ। তিনি কর্মীদের কখনো ছোট করেননি সোমেন দা যদি কাউকে কোন প্রতিশ্রুতি দিতেন সেই প্রতিশ্রুতি রাখার তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করতেন। রাজনীতিতে সৌজন্য বোধের এক অনন্য নজির তৈরি করেছিলেন তিনি। বর্ষীয়ান নেতাদের সোমেন দা অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন । যখনি কোথাও তাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে উঠে দাঁড়িয়ে তিনি সম্মান জানাতেন শুধু কংগ্রেস দলের নয় কংগ্রেস থেকে যাবে চলে গিয়েছেন তারাও সোমেন বাবুক শ্রদ্ধা করতেন, ভালো বাসতেন। আজ তার প্রয়ান কংগ্রেস রাজনীতিতে একটা বড় ক্ষতি। এ ক্ষতি পূরণ হবার নয়। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তাঁর আত্মা চিরশান্তি লাভ করুক।