হাওড়া , ২২ জুন:- ছেলে করোনায় আক্রান্ত। রবিবারই তাঁকে ভর্তি করা হয় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। এদিকে, আজ সোমবার ভোরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন মাও। বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাওড়ার বালির বীরেশ্বর চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বহুতল আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দেহ সৎকারের জন্য কাউকেই প্রথমে উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এদিকে, বাসিন্দাদের বাধায় মৃতদেহ গেটের সামনেই পড়ে থাকে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা। পরে খবর পেয়ে প্রশাসন তৎপর হয়। প্রাক্তন কাউন্সিলরকেও জানানো হয়। এরপর বালি থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। আবাসনের বাসিন্দাদের অমানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বালি থানা সূত্রের খবর, ঘটনা জানার পর পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
জানা গেছে, মহিলার মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণে এই কথা মনে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় সেই দেহ কয়েক ঘন্টা পড়ে ছিল রাস্তার ধারে বৃষ্টির মধ্যেই। মৃতার স্বামীর কোনও অনুরোধেই কান দেননি স্থানীয়রা। প্রাক্তন কাউন্সিলর ও পুলিশের সঙ্গেও বচসা হয় স্থানীয়দের। পরে পুলিশ ও স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর উদ্যোগ নেন। সোমবার এমন ঘটনাই ঘটেছে বালির হপ্তাবাজার এলাকার বীরেশ্বর চ্যাটার্জি স্ট্রীটে।দীর্ঘদিন ধরেই একটি বহুতলের পঞ্চমতলায় বসবাস করতেন রাজকুমারী জৈন। তিনি দীর্ঘদিন অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন। এদিন ভোরবেলায় তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁর স্বামী বিনোদ কুমার জৈন তাঁকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসা। তারপরেই দেহটি নিয়ে পরিবার চলে আসেন বাড়িতে।
সেখানে ওই মহিলার মৃত্যুর কথা জানাজানি হতেই এলাকার বাসিন্দারা তাঁর দেহ আবাসনের ভেতরে নিয়ে যেতে বাধা দেন। ফলে রাস্তার ধারেই দেহটি রেখে দিতে হয়। পরিবারসুত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন মৃতা রাজকুমারী জৈনের(৫৩) ছেলে অসুস্থ হয়ে হুগলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়লে ওই যুবককে কলকাতার একটি কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই যুবক। যার ছেলে করোনা আক্রান্ত, তার মায়ের মৃত্যুও করোনাতেই হয়ে থাকতে পারে এই সন্দেহের বশবর্তী হয়েই দেহটি আবাসনের ভেতরে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলার করোনা হয়েছিল কি না তা পরীক্ষা করা হবে। তবে করোনার রোগী ধরে নিয়েই নিয়ম মেনে তাঁর দেহ সৎকার করা হবে।