সুদীপ দাস,১৩ এপ্রিল:- বয়স মাত্র নয় বছর। কিন্তু পারিবারিক পরিবেশ যে শিশুমনে প্রভাব ফেলে তার জ্বলন্ত উদাহরণ চুঁচুড়া রথতলা, বাবুগঞ্জের বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ত্রিজিতা সিংহ। প্রতিবছরই নববর্ষে দুটি জামা পাওনা হয় ত্রিজিতার, মা ও বাবার কাছ থেকে। কিন্তু এবার যে লকডাউন। তাই এবার আদরের সেই ছোট্ট মেয়েটা নতুন জামা পরবে কি করে ? বাবা সৌমিত্র সিংহের এক বন্ধুর জামা কাপড়ের ব্যবসা থাকার সুবাদে বাবা দুটি জামাও কিনে ফেলেন। প্রত্যাশামতো সৌমিত্র বাবু ভেবেছিলেন হয়তো নতুন জামা পেয়ে মেয়ে খুব আনন্দ পাবে। কিন্তু এত সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা। জামা হাতে পেয়েই মুখভার। আর তারপরই বাবা মেয়ের অন্য চিত্র দেখল দেখলে চোখের কোন থেকে বেয়ে পড়ছে জল। কিছু না বুঝতে পেরে বাবা সৌমিত্র সিংহ এবং নিত্য শিল্পী মা মৈত্রীয়ী দে সিনহা মেয়েকে বুঝিয়ে কান্না থামান। তবে মেয়ের কান্নার কারণ শুনে অবাক হয়ে যান তারা। কারণ মেয়ের উত্তর ছিল “করোনায় এত লোক মারা গেছে, কত লোক খেতে পারছেনা, কত বন্ধু নতুন জামা পড়তে পারছে না, আমি কিছুতেই নতুন জামা পড়বো না।” মেয়ের এই উত্তরে প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে মেয়ের এই চিন্তাভাবনাকে সম্মান জানাতে ত্রিজিতার জামার টাকা এবং ঘটে জমানো টাকা মিলিয়ে মোট ২০০০ টাকার চেক তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। এদিন হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের হাতে এই চেক তুলে দেয় ত্রিজিতা। ত্রিজিতার বাবা ও মা দুজনেই রামকৃষ্ণ মিশনের শিষ্য । মেয়ের এই শিবজ্ঞানে জীবসেবায় বাকরুদ্ধ সিংহ দম্পতি।