সুদীপ দাস,১০ ফেব্রুয়ারি:- শ্বেতী অর্থাৎ চামড়া সাদা হয়ে যাওয়া। জন্মের পরে হওয়া এই রোগের চিকিৎসা থাকলেও জন্মগত শ্বেতীরোগের নিরাময় নেই বললেই চলে। মনুষ্য জাতির মধ্যে শ্বেতি রোগ নিরাময়ে নানারকম গবেষনা চললেও এই রোগ কিন্তু শুধু মনুষ্য সমাজেই সীমাবদ্ধ নয়। অন্যান্য প্রানীকূলের পাশাপাশি জন্মগত শ্বেতীতে আক্রান্ত হয় সর্পকূলও ! তবে সহস্রর মধ্যে একটি। অর্থাৎ ডুমুরের ফুলের থেকেও বিরল। সেইরকমই জন্মগত এক শ্বেতী আক্রান্ত সাপ বর্তমানে চিকিৎসাধীন ব্যান্ডেলের সর্পপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিং-এর বাড়িতে। দিন কয়েক আগে ব্যান্ডেল করোলা এলাকায় সরস্বতী নদীর পারে ফাঁদি জালে আটকে যাওয়া জখম একটি বিষাক্ত সাপকে উদ্ধার করেন চন্দনবাবু। যাকে ভারতবাসী চেনে শাখামুটি হিসাবে। নিউরোটক্সিন যুক্ত বিষাক্ত ওই সাপের ইংরেজী পরিভাষা “ব্যান্ডেড ক্রেট”। যা মূলত হলুদ ও কালো রংঙেরই হয়। কিন্তু চন্দনবাবুর হাতে উদ্ধার হওয়া শাখামুটির রং সাদা ও হলুদ। হলুদ রং-টিও সেভাবে গাঢ় নয় ! দীর্ঘদিন ধরে জীবকূল নিয়ে কাজ করা চন্দন ধূসর রংঙা এই শাখামুটি দেখে অনেকটাই বিস্মিত হয়েছিলেন।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে তিনি নিশ্চিত হন সাপটি জন্মগত শ্বেতীতে আক্রান্ত। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যে শাখামুটি “অ্যালভিনো ব্যান্ডেড ক্রেট” নামে পরিচিত। শাখামুটির ক্ষেত্রে যা কোটিতে একটা হতে পারে। অসুস্থ সেই সাপই এখন চন্দনের বাড়িতে পরিচর্যায় রয়েছে। চন্দনবাবুর কথামত হলুদ-কালো রংঙা শাখামুটি বন-জঙ্গলের পরিবেশের সাথে মিলিয়ে যায়। কিন্তু শ্বেতী আক্রান্ত সাদা রং-ই তার খাদক শিকারী পাখীর নজর এড়াতে অক্ষম হবে। চন্দনবাবু বলেন ব্যান্ডেড ক্রেট এমনিতেই বিরল তার উপর এই অ্যালভিনো জাতীয় সাপ বিরলতর। শরীরের অস্বাভাবিক রং-এর কারনে শিকারীদের নর এড়াতে এরা সক্ষম হয়না। তাই সাধারণ পরিবেশে বেড়ে ওঠার আগেই এরা ভক্ষকদের শিকার হয়। তাই কোন সরকারি কিংবা বেসরকারী সংস্থা এই বিরল সাপটির দ্বায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসুক, সেদিকেই তাকিয়ে সর্পপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিং।