দ:২৪পরগনা,২৬ জানুয়ারি:- সুন্দরবনের পালিত মায়ের বিরল দৃশ্য।দীর্ঘ ছয় মাস আগে উত্তরপ্রদেশের বারানসি জেলার চৌবেপুর থানার এলাকার ঘটনা। বছরের ২৩ এর যুবক ছোটেলাল যাদব নিখোঁজ হয়ে যায়। আর বাড়ি ফিরে না। বাবা বারানসি যাদব। নিকটাত্মীয় ও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিলে তাদের ছেলের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না ।চৌবেপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এই যুবক মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল বলে খবর। ভারতবর্ষের শেষ প্রান্ত অর্থাৎ রাজ্যের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে স্যান্ডেল বিল এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। ২০১৯ এর দুর্গাপূজার সময় ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় এক যুবক রাহুল বিশ্বাস তারপর পুজোর প্যান্ডেল এর মধ্যেই তাকে রাত কাটানোর জন্য ব্যবস্থা করে। কিন্তু সে আর বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেনা। রাহুল ওই যুবককে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। রাহুলের মা গীতা ভিশ্বাস তাকে সুস্থ সেবা করে তার সব রকম দায়িত্বভার নেয়। কখনো নতুন জামাকাপড়।
আবার কখনো অসুস্থ তার ঠিকমতো চিকিৎসা করা। ওষুধ খাওয়ানো নিজের ছেলের মতো ছোটে লাল কে এই দীর্ঘ 6 মাস ধরে লালন পালন করে আসছে । এমনকি দাড়ি বড় হলে পালিত মা ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়। এবং সব রকম ভাবে তাকে সুস্থ সেবা করে নিজের সন্তানের মতো। আগলে রাখে। গত শুক্রবার বিশিষ্ট সমাজসেবী সুশান্ত ঘোষের কাছে এই বিষয়ে জানালে । তার নাম ও ঠিকানা জানার চেষ্টা করলে। সে থানার কথা বলে তখনই ইন্টারনেট সার্চ করে। ওই যুবকের বাড়ির পাশে একটি মোবাইলের দোকানে যোগাযোগ পায় ।তখন কথা হলে ওই মোবাইল ফোনের ব্যবসায়ী পুরো ঘটনা শোনার পরে ঠিকানা যোগাযোগ করে। ছোটেলাল এর ভাই সুরাজ যাদব এর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়। হোটেলের ছবি পাঠানো হয় তাদের দাদা 6 মাস হারানো সেই ছেলে। আজ রবিবার সন্ধ্যেবেলা দুন এক্সপ্রেস ছোটে লাল এর বাবা বানারাসি যাদব মা মেনোকা যাদব ভাই সুরাজ যাদব হাতে তুলে দেয়া হবে হারানো ছেলেকে। একদিকে হিঙ্গলগঞ্জ ঘুরে বেড়ানোর যুবক ছোট লাল এর বাড়ি চলে যাওয়া মুখে হাসি ও আনন্দ। অন্যদিকে পালিত গীতা বিশ্বাসের চোখে জল। নিজের ছেলের মতো সুস্থ সেবা করেছেন। কিন্তু আরেক মায়ের ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে হবে। তাই দু চোখ ভরা জল অন্যদিকে সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি গীতা দেবি।। হিঙ্গলগঞ্জ এর বাজার কমিটির সম্পাদক সুশান্তবাবু বলেন। গত ২২ বছরে ৩৭ জনকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের যুবককে তাদের পরিবার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। গত এক মাসে তিন যুবক কে বিহার ঝাড়খণ্ড উড়িষ্যায় ফিরিয়ে তুলে দিয়েছি পরিবারের হাতে। আমরা মানসিক শান্তি পাই। বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পারলে মনে তৃপ্তি আসে। তাই এই কাজ করে চলেছি। যার সন্তান হারিয়ে যায় কতটা কষ্ট আমরা বুঝতে পারি ।সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে । তাই এই কাজ করছি আগামী দিনেও করে যাব।





