মালদা,১৪ জানুয়ারি:- পাকা সেতু তৈরির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হতে চলেছে গ্রামবাসীদের। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের বরাদ্দ প্রায় ১০ কোটি টাকায় তৈরি হচ্ছে কালিন্দীর নদীর ওপর পাকা সেতুটি। ইতিমধ্যে সেতুর কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। আর যার ফলে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে লাখো গ্রামবাসীদের মধ্যে। ইংরেজবাজার ব্লকের ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাজুড়ে রয়েছে কালিন্দী নদীটি। নদীর অপর প্রান্তে রয়েছে নরহাটটা গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রতিদিনই হাজারো মানুষদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার হতে হয়। আর তার জন্যই এই কালিন্দী নদীর ওপর পাকা সেতু তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লাখো মানুষ। গ্রামবাসীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই অবশেষে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেই কালিন্দী নদীর ওপর পাকা সেতু গড়ে তোলার। আর সেতুর কাজ চালু হতেই এখন আনন্দের জোয়ার এসেছে ইংরেজবাজার ব্লকের ফুলবাড়িয়া, নরহাটটা, মিল্কি সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। ইংরেজবাজারের বিধায়ক নিহার ঘোষ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে এই ধরনের উন্নয়ন সম্ভব। মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন, আশা পূরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের বরাদ্দ অর্থে তৈরি হচ্ছে কালিন্দি নদীর ওপর পাকা সেতুটি। ইতিমধ্যে সেতুর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যার ফলে মানুষ এখন দুই হাত তুলে তৃণমূল সরকারকে আশীর্বাদ করছে। বিগত দিনে বাম সরকার ক্ষমতায় থেকেও ওই এলাকার মানুষদের সমস্যার কথা ভাবি নি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে কালিন্দী নদীর ওপর পাকা সেতু গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার ব্লকের কালিন্দী নদীর এক প্রান্তে রয়েছে ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। অপর প্রান্তে রয়েছে নরহাটটা গ্রাম পঞ্চায়েত। এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ নৌকা করে নদী পারাপার করেন। শুখার মরশুমে নদী ছোট হলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সাহায্য নিয়ে বাঁশ, চাটাই দিয়ে অস্থায়ী সেতু গড়ে তোলেন। কিন্তু বন্যার সময় নদীর জলে ভেসে চলে যায় সেই অস্থায়ী বাঁশের চাটাইয়ের সেতু। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নৌকা পারাপার করতে হয় হাজার হাজার বাসিন্দাদের। বিগত দিনে মালদায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার কাছেই স্থানীয় গ্রামবাসীরা কালিন্দী নদীর উপর পাখা সেতু গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছিলেন। আর সাধারণ মানুষদের স্বার্থের কথা ভেবেই মুখ্যমন্ত্রীর নদীর ওপর পাকা সেতু গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর গতবছর কালিন্দীর নদীর ঘাট পরিদর্শনে আসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পুরো বিষয়টি তদারকি করে দেখার পরই তিনি সেখানে সেতু তৈরির কথা বলেন। রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি মতোই শুরু হয়েছে এখন কালিন্দী নদীর উপর পাখা সেতু গড়ে তোলার কাজ।
ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুর গ্রামের বাসিন্দা নির্মল মন্ডল, এজাহার শেখ, আব্বাসউদ্দিন শেখদের বক্তব্য, নদী পারাপার করেই প্রতিদিন কাজকর্ম করতে হয় তাদের । নৌকা নিয়ে পথে নদী চলাচল করার সময় জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। নদীর দুই পাড়ে হাইস্কুল, প্রাইমারি স্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে নদীর পথ পেরিয়েই গ্রামবাসীদের যাতায়াত করতে হয়। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা ভেবেই সরকার ও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল পাকা সেতু গড়ে তোলার। আর সাধারণ মানুষের কথা রেখেছেন রাজ্য সরকার। এখন গ্রামজুড়ে খুশির জোয়ার। ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাবলু শেখ বলেন, নদীপথে মূলত গ্রামবাসীদের চলাচল করতে হয়। বাজারহাট থেকে যাবতীয় কাজকর্ম করার ক্ষেত্রে নৌকায় একমাত্র ভরসা। বর্ষার সময় নদী ফুলে-ফেঁপে ওঠে । ছোট ছোট স্কুলের ছেলেমেয়েদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা করে যাতায়াত করতে হয়। বিগত দিনে নৌকাডুবির মতন ঘটনাও ঘটেছে । কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার এক সময় ক্ষমতায় থেকে কালিন্দী নদীর ওপর সেতু গড়ে তোলার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয় নি। বর্তমানে তৃণমূল সরকার এখন এই এলাকায় পাকা সেতু গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। এখন মানুষ উচ্ছ্বাসিত । ওই এলাকার মানুষ এখন নতুন সেতু তৈরির অপেক্ষায় রয়েছে।