দ:২৪পরগনা,১৩ জানুয়ারি:- প্রস্তুতি শেষ। মঙ্গলবার মাঝরাত ১২টা ২৪মিনিট থেকে শুরু হয়ে যাবে পুণ্যস্নান। ডুবকি দেবেন লক্ষ লক্ষ সাধুসন্ত থেকে দেহাতি তীর্থযাত্রীরা। ইতিমধ্যে সোমবার অবধি ২১লক্ষ তীর্থযাত্রী সাগরে এসেছেন। স্নান সেরে ফিরেও গিয়েছেন। বিকেলে সাংবাদিকদের সম্মুখিন হয়ে জানালেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই সময় বছর তিনেকের বাচ্চা কোলে এক মহিলা ও দূরে তাঁর স্বামী ঠায় দাঁড়িয়ে। চোখেমুখে উৎকণ্ঠার ছবি। সাংবাদিক সম্ভেলন শেষ হতেই মঞ্চের দিকে এগিয়ে যায়। জেলাশাসকের সামনে চরম হেনস্থার কথা বলতে শুরু করেন। সাগর বাগবাজার এলাকার বাসিন্দা তথা সেনাবাহিনীতে কর্মরত সুকমল খাঁড়া স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে সোমবার বিকেলে এসেছিলেন গঙ্গাসাগর মেলায়। কিন্তু মন্দির থেকে ফিরবার সময় পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়লেন। মন্দিরের দক্ষিণ দিকের রাস্তা দিয়ে বেরবার সময় অন্যদের সঙ্গে স্ত্রী মণীদিপা বেরিয়ে গেলেও আটকে দেওয়া হয় সেনা কর্মী সুকমল ওঁ তাঁর ছোট্ট সন্তানকে। বলা হয় ঘুরে যাবার জন্য। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে প্রায় ৮০০মিটার ঘুরে ফিরে আসবার আগে স্ত্রীর হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কিন্তু ওখানের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মী কোন কথা শুনতে চাননি। বচসা চলাকালীন কোলে সন্তান থাকা অবস্থায় সেনা কর্মীকে কলার ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সেনা কর্মী সুকমল খাঁড়া জানান, আমি নিজেকে সেনা কর্মী পরিচয় দিলেও অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী চরম হেনস্থা করেন। সন্তান কোলে ছিলে সেই অবস্থায় আমাকে কলার ধরে মারা হয়। স্থানীয় মানুষের সামনে এমন ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গেও অভদ্র আচরণ করতে থাকেন। সাগর এলাকার বাসিন্দা এবং একজন সেনা কর্মী হওয়া স্বত্বেও পুলিশের এহেন ব্যবহারে এগিয়ে আসেন অনেকে। মেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ জানাতে যাওয়ার কথা বললে অভিযুক্ত অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী আরও ক্ষ্রিপ্ত হয়ে যান। কয়েকজন পুলিশ কর্মী কে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে আসেন। তারপর আমরা চলে আসি মেলা অফিসে। ওখানেই জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জানাই। উনি লিখিত জানাতে বলেন। সেইমত লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দিই। সূত্রের খবর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর নাম দেবাশিস বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয় ওই পুলিশ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী পাল্টা জানিয়েছেন, ওঁনাকে বলা হয়েছিল গেট বন্ধ ঘুরে যাবার। উনি সে কথা শুনতে চাননি। উনি আমার গায়েও হাত তুলেছেন।
পূর্ণ স্নানের সময় যত এগিয়ে আসছে মেলাজুড়ে উদ্দীপনাটা বেড়ে চলেছে। বড় রাস্তা হয়ে লম্বা ভিড় সাগরে ধেয়ে আসছে। ইতিমধ্যে পূর্ণার্থীদের জন্য ব্যবস্থার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। ১৫ ঘন্টা জেটিতে পরিষেবা চলছে। পুলিশ, ফায়ার, সিভিল ডিফেন্স, এনডিআরএফ, কোস্ট গারড একত্রে কাজ করছে। ৬হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। ৩৬০ বার ভেসেল ট্রিপ মেরেছে। পুলিশের কাছে ২০৬টি কেস এসেছে। গ্রেফতারের সংখ্যা ১১৬। গাড়ির ওভারস্প্রিডের জন্য ৮৭টি ফাইন করা হয়েছে। এই প্রথম দুজন আহত কে হেলিকপ্টারে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।