এই মুহূর্তে খেলাধুলা

স্কেটিং-এর হাত ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের ইচ্ছা ছোট্ট শুভায়নের।

 

হুগলি,৫ ডিসেম্বর:- বংশানুক্রমে সঙ্গীতজগতের সাথে যুক্ত চুঁচুড়া পিপুলপাতির নন্দী পরিবার। ঠাকুরদার সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক জীবনমুখি গানের প্রখ্যাত শিল্পী নচিকেতার। বাবা-মা সঙ্গীতে যথেষ্ট পারদর্শী। দু’জনেই পেশাগতভাবে দুটি বেসরকারী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতার সাথে যুক্ত। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে গিটার, হারমোনিয়াম দেখে বড় হয়ে ওঠা। সেই পরিবারের ক্ষুদে সদস্য শুভায়নই জেলা ও র‍াজ্য স্তরের রোলার স্কেটিং প্রতিযোগীতায় যথাক্রমে সোনা ও ব্রোঞ্জ জিতে নিয়ে এলো। শুভায়নের সাফল্যে অনেকেই স্কেটিং-এ আসার কথা ভাবছে। বছর ১২-র শুভায়ন চন্দননগর কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র। গান বাজনার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সে। সেকথা বুঝতে পেরেই হয়তো শুভায়নের মা অন্তরা নন্দী ছোটবেলায় তাঁকে হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার সুইমিং পুলে ভর্তি করে দেয়।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                          গান-বাজনা পড়াশুনার পাশাপাশি সাঁতারও চলতে থাকে তার। তবে বছর তিনেক আগে বাবা-মায়ের সাথে দেহরাদুনে ঘুড়তে গিয়ে পায়ে চাকা লাগানো মানুষগুলিকে দেখেই শুভায়নের স্কেটিং-এর ইচ্ছা জাগে। সেদিনই বহু কষ্টে বাবা-মাকে রাজি করিয়ে একপ্রস্থ স্কেটিং করে নেয় সে। শুভায়নের মা অন্তরা দেবীর কথায় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ খেলা বুকটা ধড়ফড় করছিলো। কিন্তু স্কেটিং শেষে যারা তাঁকে স্কেটিং করাচ্ছিলো তাঁরা যখন বললো প্রথম দিনেই ও খেলাটিকে বেশ রপ্ত করে ফেলেছে ওর মধ্যে প্রতিভা আছে তখন অনেকটাই সাহস পেলাম। তারপর বাড়ি ফিরে একদিন একদিন চুঁচুড়ার স্ট্র্যান্ড রোডে স্কেটিং শেখানোর ব্যানার দেখে যোগাযোগ করি। সেখান থেকেই হাতেখড়ি। মাত্র আড়াই বছরের প্রশিক্ষনে শুভায়ন জেলাস্তরের প্রতিযোগীতায় সোনা অর্জন করে ফেলেছে। সেখান থেকেই কোলকাতার সাইতে অনুষ্ঠিত রাজ্য স্তরের রোলার স্কেটিং প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করার সুযোগ পেয়ে ব্রোঞ্জ পদক ঘরে তুলেছে শুভায়ন। শুভায়ন বলে পড়ার ফাঁকে বাড়িতে স্কেটিং-এর জন্যে ছাদে চলে যাই। তার ইচ্ছা স্কেটিং করেই ভবিষ্যতে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করা। শুভায়নের বাবা শুভদীপও এখন ছেলের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                           ছেলে পদক নিয়ে আসায় গোটা পরিবারই উজ্জীবিত। শুভায়নের কোচ অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন এই খেলাটির সাথে বাঙালীরা সেভাবে পরিচিত নয়। তাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সেভাবে সুযোগ-সুবিধা মেলেনা। তবে জাতীয় স্তরে স্কেটিং খেলোয়ারদের ভালো সুযোগ রয়েছে। অনেক কষ্টে চুঁচুড়ার ধান্য গবেষনা কেন্দ্রের রাস্তায় স্কেটিং প্রশিক্ষনের জন্য সরকারী ছাড়পত্র মিলেছে। আপাতত শনি ও রবিবার অনিন্দ্যর ছাত্র-ছাত্রীরা সেখানেই প্রশিক্ষন নিচ্ছে। শুভায়ন প্রসঙ্গে প্রশিক্ষকের বক্তব্য ওকে দেখে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই খেলা নিয়ে আগ্রহ বাড়বে। ভবিষ্যতে যাই হোক না কেনো আপাতত কখনও বাড়ির ছাদ, কখনও ফাঁকা রাস্তায় শুভায়নের পায়ের চাকা ছুটছে। যা দেখে মূলতঃ বরফের দেশে জনপ্রিয় এই খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চুঁচুড়া বাসীর। আগামীদিনে সেই আগ্রহ-ই হুগলী থেকে স্কেটিং-এ নতুন প্রতিভা জন্ম দিতে পারে।

There is no slider selected or the slider was deleted.