হুগলি, ২৫ ফেব্রুয়ারি:- টানা চার দিনের সিপিআই(এম) রাজ্য ২৭তম সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে ৮০ জনের নতুন রাজ্য কমিটি নির্বাচিত হয়েছে। রাজ্য কমিটির প্রথম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আবারও রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন মেদিনীপুরের তাবর সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ সহ আরও পাঁচ জন। মূল কমিটিতে জায়গা হল না, সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য্যকে রাজ্য কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হলো। বিকাশ বাবু সহ রাজ্য কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন মোট পাঁচ জন। বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যরা হলেন বিমান বসু, বিকাশ ভট্টাচার্য্য, সূর্য্যকান্ত মিশ্র, রবিন দেব এবং জীবেশ সরকার। মোট ৮০ জনের রাজ্য কমিটিতে স্থান পেলেন মাত্র ১৪ জন, অর্থাৎ ১৭.৫ শতাংশ মহিলা। উল্লেখযোগ্য ভাবে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন, দার্জিলিং জেলার জিবেশ সরকার, মেদিনীপুরের সুশান্ত ঘোষ, বাঁকুড়ার অমিয় পাত্র এবং বর্ধমান জেলার কালনার মহিলা নেত্রী অঞ্জু কর।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ডানকুনি কোল কমপ্লেক্সের মুক্ত মঞ্চে শুরু হয়েছিল সিপিএমের ২৭ তম রাজ্য সম্মেলন। মঙ্গলবার ছিলো সম্মেলনের শেষ দিন। একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় প্রকাশ্য সমাবেশ। এদিন দুপুরে ডানকুনি ফুটবল ময়দানে আয়োজিত প্রকাশ্য সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সিপিএমের কনভেনর প্রকাশ কারাত, বিমান বসু, দেবলীনা হেমব্রম, মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখার্জি, বৃন্দা কারাত, সুজন চক্রবর্তী, সূর্যকান্ত মিশ্র, হান্নান মোল্লা প্রমুখ। আয়োজিত প্রকাশ্য সভা পরিচালনা করেন হুগলি জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। এছাড়াও সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সিপিএম কর্মী সমর্থক। এদিন শুরুতেই সভা মঞ্চ থেকে করা ভাষায় বিজেপি কে আক্রমণ করেন সিপিএম নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম। এদিন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা প্রকাশ কারাত বলেছেন, “চার দিন ধরে রাজ্য সম্মেলন চলেছে। সাহায্য করার জন্য হুগলির মানুষকে ধন্যবাদ।
নানান প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বামপন্থীদের লড়াই চলছে। কেন্দ্রে মোদী সরকারের জন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। লড়াই চলছে বিরোধী দলের কন্ঠরোধ করা, সংবিধানকে নষ্ট করার প্রতিবাদে। বাংলার মানুষ কেন্দ্রের মনরেগার সুবিধে পায়না। একশ দিনের কাজের অধিকার থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। নানান বাহানায় মোদী সরকার রোজগার গ্যারান্টি থেকে বাংলা কে বঞ্চিত করেছে। কাজের অধিকার আইনানুগ, দেশের সকলের জন্য। অথচ রাজ্যের গরীব মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান, আমরা বরদাস্ত করবো না। পশ্চিম বাংলায় বিজেপি এবং পেছনে থাকা আর এস এস সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে।
রাজ্যকে হিন্দু সাম্প্রদায়িক গড় বানানোর চেষ্টা চলছে। মোহন ভগবত সম্প্রতি দশ দিন এই রাজ্যে ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিভাজনের লক্ষেই যোজনা তৈরি করেছেন। মীনাক্ষী মুখার্জি বলেছেন, সারা পৃথিবীতে যারা গরীব মানুষকে পায়ে পিষে মেরে ফেলতে চায় তারা ঐক্য বদ্ধ হচ্ছে। মোদী প্লেনে করে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে যায়। আর ওই আমেরিকা, হাতে পায়ে করা লাগিয়ে ভারতীয়দের ফিরিয়ে দিয়ে যায়। সব রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে মোদী সরকার বিক্রি করে দিচ্ছে। এদিন সভামঞ্চ থেকে আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেডে সমাবেশের ডাক দেন মীনাক্ষী।