কলকাতা, ৩১ জুলাই:- পঞ্চভূতে বিলীন হলেন নির্মলা মিশ্র।রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় রবিবার সন্ধ্যায় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়। মধ্যরাতে নিজ বাসভবনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮১ বছর বয়সী এই সংগীত শিল্পীর। শনিবার সারারাত দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নির্মলা মিশ্রের মরদেহ রাখার পরে রবিবার সকালে তা নিয়ে আসা হয় রবীন্দ্র সদনে। এদিন সকাল ১১ টা থেকে নির্মলা মিশ্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্রসদন চত্বরে হাজির হন সংগীত জগতের একাধিক শিল্পী। ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, পূর্ণদাস বাউল উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গেই শিল্পীর বহু গুণমুগ্ধ ভক্তও এদিন সকাল থেকেই রবীন্দ্র সদন চত্বরে ভিড় জমিয়েছিলেন। রবীন্দ্র সদনে রাখার পর শিল্পীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্য সঙ্গীত একাডেমিতে। রবিবার সকালে নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোকপ্রকাশ করেছেন সংগীত জগতের একের পর এক বিশিষ্ট শিল্পীরা।
নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে এদিন সকালে টুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রবিবার সকালে একটি শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। তিনি গভীর রাতে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। নির্মলা মিশ্রের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীত জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি নির্মলা মিশ্রের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’ এদিন তিনি আরও লেখেন, ‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তাঁর গাওয়া এই বাংলার মাটিতে, এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, ও তোতা পাখি রে-র মতো অজস্র কালজয়ী গান আজও শ্রোতাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। আধুনিক, নজরুলগীতি, শ্যামাসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, লোকগীতি ছাড়াও বহু ছায়াছবিতে তিনি গান গেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদ ও বাংলা সঙ্গীতমেলা কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে ‘সঙ্গীতসম্মান’ এবং ২০১৩ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ ও ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মাননা প্রদান করে।’