কলকাতা, ২ জুলাই:- সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটায় এবার কড়া হাতে হাল ধরছে রাজ্যে সরকার। পুলিশকে এব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। একইসঙ্গে মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যকে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি এবং পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে একথা জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ ভার্মা। এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার কথা রাজ্য সরকারের গোচরে এসেছে। এই সূত্রে পুলিস কর্তৃপক্ষকে সর্বাধিক সতর্কতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে এবং কড়া আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। মানুষকেও জাগ্রত ও সতর্ক থাকতে হবে। ঘটনাগুলি দুঃখজনক। এই সকল ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির জন্য কোনও ক্ষতিপূরণই যথেষ্ট নয়।
তথাপি, অর্থনৈতিক সহায়তার লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্থ পরি বেন না। কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে পুলিশকে জানান। কিন্তু তা না করে হাতে আইন তুলে নিলে আমরা বরদাস্ত করব না।” প্রশাসনের শীর্ষ মহলের তরফে এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মানুষকে আইন মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে নজরদারি ও জনসংযোগ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্যে গত কয়েকদিনে একাধিক ব্যক্তি নিছক সন্দেহের বশে গণপিটুনিতে মারা গিয়েছেন। এদের অধিকাংশেরই বয়স খুবই কম। মর্মান্তিক ওই সব ঘটনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের হয় চোর অথবা ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। অথচ পরে দেখা গিয়েছে, যে সন্দেহ বা অপবাদে এই সব গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে বিন্দুমাত্র যোগ নেই মৃত ব্যক্তিদের। শুধু গুজব, সন্দেহ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের জায়গা থেকে মর্মান্তিক ভাবে তাঁদের পিটিয়ে মারা হয়েছে। আর সেই সব মৃত্যুর ঘটনায় মৃতদের পরিবার শুধু মানসিক ভাবেই ধাক্কা খায়নি, ধাক্কা খেয়েছে অর্থনৈতিক ভাবেও। কেননা অনেকেই ছিলেন নিজ পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের এদিনের সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।