এই মুহূর্তে কলকাতা

মঙ্গলবার রাজ্যের ৪২ টি আসনের গণনা হবে ৫৫ টি কেন্দ্রে।

কলকাতা, ২ জুন:- সাত দফার সুদীর্ঘ লোকসভা ভোট পর্ব শেষ। যুযুধান সমস্ত রাজনৈতিক শিবিরের প্রার্থীদের ভাগ্য আপাতত ইভিএম বন্দি অবস্থায় স্ট্রংরুমে অন্ধকারে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। যা জনসমক্ষে আসবে আগামী মঙ্গলবার ৪ঠা জুন। দেশজুড়ে অধীর আগ্রহে ওই দিনের অপেক্ষা চলছে। মঙ্গলবার সারা দেশের ৫৪৩ টি লোকসভা আসনের গণনা। এরাজ্যেও ৪২ টি আসনের গণনা হবে রাজ্যের ৫৫টি গণনাকেন্দ্রে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে গণনার কাজ সম্পন্ন করতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি থাকছে ১৪৪ ধারা। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে গণনা কেন্দ্রগুলিতে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় থাকছে। প্রথম পর্যায়ে থাকবে লাঠিধারী কনস্টেবল ও এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ এবং এরপর বাকি গণনা কেন্দ্র ঘিরে তৃতীয় পর্যায়ে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।রাজ্যের ৫৫ টি গণনা কেন্দ্রে নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে ৯২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। থাকবে ২৫২৫ জন রাজ্য পুলিশ। গণনা কেন্দ্রে প্রতি বিধানসভা পিছু একজন করে পর্যবেক্ষক থাকবেন। অর্থাৎ ২৯৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ২৯৪ জন গণনা পর্যবেক্ষক থাকবেন। গণনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য একগুচ্ছ বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গণনা কেন্দ্রে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষকরাই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। এর পাশাপাশি সমগ্র গণনা কেন্দ্র সহ তার চারপাশ সিসিটিভিতে মোরা থাকবে। গণনা কেন্দ্রের ভিতর ওয়েব কাস্টিং হবে না। থাকবে শুধু সিসিটিভি।

পোস্টাল ব্যালট গণনার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একবারই নির্দিষ্ট ওটিপি দেখার জন্য মোবাইল ব্যবহার করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার। এছাড়া গণনা কেন্দ্রের মধ্যে আর কেউই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে একমাত্র সাদা কাগজ ও পেন ছাড়া কোন কিছু নিয়েই প্রবেশ করা যাবে না। যদি মোবাইল কারুর কাছে পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী তা বাজেয়াপ্ত করবে এবং নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী তাঁর হাজতবাস অথবা জরিমানা হতে পারে। কোনো সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষক, সাম্মানিক সরকারি ভাতা প্রাপ্ত কর্মী, চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মী গণনা কর্মী হতে পারবেন না। গণনা কেন্দ্রের কর্মীরা বাধ্যতামূলকভাবে বেতনভুক সরকারি কর্মীই হবেন। সমস্ত গণনা কর্মীর নির্দিষ্ট সরকারি আইডেন্টিটি কার্ড থাকতে হবে। একমাত্র প্রার্থী অথবা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট নিজস্ব লোকসভা কেন্দ্রের সব টেবিলে যেতে পারবেন। গণনা এজেন্টরা নির্দিষ্ট নম্বরের টেবিল ছাড়া অন্য টেবিলে যেতে পারবেন না। গণনা কেন্দ্র থেকে একবার বাইরে বেড়িয়ে গেলে আর কেউ ফের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। শুধুমাত্র অবজারভার ও রিটার্নিং অফিসারদের ক্ষেত্রে এই নিয়মে নিষেধাজ্ঞায় ছাড় রয়েছে।

মিডিয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকবে গণনা কেন্দ্রে। গণনার যাবতীয় খবরাখবর দেওয়ার জন্য রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক মিডিয়া এনক্লেভে থাকবেন। গণনা কেন্দ্রের ভিতর ছবি করার জন্য একবারই গণনা শুরুতে মিডিয়াকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। আগামী চার জুন রাজ্যের ৫৫ টি গণনা কেন্দ্রে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টি লোকসভা কেন্দ্রে 80,530 টি ভোটকেন্দ্র সহ পোস্টাল ব্যালট গণনা। গণনা কেন্দ্রগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রাজ্যে ৫০৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন সাড়ে সাত কোটির বেশি ভোটার। ## মোট ভোটার– ৭,৬০,১০,০০৬ জন। ## মোট প্রার্থী — ৫০৭ জন। ## স্ট্রংরুম ৩৯৪টি। ## গণনা কেন্দ্র ৫৫টি। ## গণনার জন্য হল ৪১৮ টি। ## গণনার জন্য মোট টেবিল ৪৯৪৪টি। ## ৫০৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে গণনার গড় ১৭ রাউন্ড। ## সবচেয়ে বেশি গণনা হবে ২৩ রাউন্ড। শীতলকুচি (৩১০ ভোটকেন্দ্র) ও দিনহাটা (৩১৮ভোটকেন্দ্র ) বিধানসভা কেন্দ্রে। ## সবচেয়ে কম ভোট গণনার রাউন্ড –৯ (দার্জিলিং লোকসভার চোপরা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট কেন্দ্র ২৫১ )।##

গণনার কাজের জন্য নিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার ৪১৮ জন। ## পোস্টাল ব্যালট এবং ইটিপিবিএস গণনার জন্য হল ৮৬টি। ## মোট পোস্টাল ব্যালট ৩৩৭৯৮১টি। ## মাইক্রো অবজারভার সহ মোট গণনা কর্মী ২৫ হাজারের বেশি। ## গণনার প্রতিটি টেবিলে থাকবেন একজন সুপারভাইজার একজন গণনা সহায়ক এবং একজন মাইক্রো অবজারভার। সবকিছু ঠিক থাকলে বেলা একটার মধ্যেই আগামী পাঁচ বছরের জন্য সকলের কাছে দেশের ভবিষ্যতের ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয় নির্বাচন কমিশন যেখানে অনেকটাই সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে এই রাজ্যে সেখানে গণনা এবং গণনার পর পরিস্থিতিকে কতটা সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়।