হুগলি, ১৫ মে:- আগামী ২০ তারিখ হুগলি জেলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। প্রত্যেক কেন্দ্রে সভা করছেন হেভিওয়েট নেতৃত্তরা। মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দেশ ও রাজ্যের নেতারা নেবে পড়েছে নিজের দলের প্রার্থীর প্রচারে। এদিন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কবীর শঙ্কর বোস এর সমর্থনে মশাট এলাকায় নির্বাচনী জনসভা করলেন অমিত শাহ। এদিন সভা থেকে প্রার্থীকে জেতানো থেকে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শনালেন অমিত শাহ। এদিন সভা থেকে তিনি বলেন,লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে না। বরং ১০০ টাকা বেশি মিলবে। এমনই ঘোষণা করেছেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা দিদি বলেন, বিজেপি এলে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি, বিজেপি কোনও প্রকল্প বন্ধ করবে না।
আমরা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ১০০ টাকা বাড়িয়ে মহিলাদের দেব।’’ এছাড়া বলেন শ্রীরামপুরের মানুষের গলার কী হল? এমন আওয়াজে হবে না। মোদীজিকে ৪০০ পার করাতে হবে। কবিরশঙ্কর বসুকে জেতাতে হবে।’’‘‘শ্রীরামপুরের জনতা, বাংলার মানুষ ভোট দেওয়ার সময় ভাববেন, কার সঙ্গে লড়াই হচ্ছে। এক দিকে রয়েছে পরিবারবাদী পার্টি। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান। সনিয়া গান্ধী রাহুল বাবাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে চান। অন্য দিকে রয়েছে, গরিব চা দোকানির বাড়িতে জন্মানো মহান নেতা নরেন্দ্র মোদী।’’এদিনের সভা থেকে অমিত শাহ আরো বলেন,‘‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপ-রাষ্ট্রপতিকে, সাংবিধানিক পদকে নিয়ে মশকরা করেন! আরে কল্যাণ ব্যানার্জি শরম করো, শরম করো, শরম করো। আপনি সাংসদ। শ্রীরামপুরের জনপ্রতিনিধি। উপরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মজা করেন!’’
শ্রীরামপুরের রাস্তা জলে ভরে যায়। নালার সংস্কার হয় না। কিন্তু এখানে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। ওগুলো ঘুষের টাকা। যখন আমরা ধরি, তখন মমতা দিদি বলেন, ইডির অপব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতি যে-ই করবেন, তাঁকেই ধরব। আপনি আঁচলে লুকিয়ে রাখলেও তাঁকে জেলে ভরব।’’ ‘‘মমতাদিদি চালাকি করছেন। মোদীজি চাল পাঠাচ্ছেন। সেখানে নিজের ছবি সাঁটাচ্ছেন মমতাদিদি। আরও পাঁচ কেজি বেশি চাল দেবেন মোদীজি। কিন্তু সিন্ডিকেট দিয়ে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে বাংলায়।’’ তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন,
‘‘শ্রীরামপুরকে বাঁচাতে কল্যাণকে হারিয়ে কবীরকে জয়ী করুন। প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করুন। বাংলা থেকে ৩০ আসন দিন।’’‘‘আঁচলে লুকিয়ে নিলেও জেলে ঢোকাব দুর্নীগ্রস্তদের। কাউকে লুকোতে পারবেন না।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মা-মাটি-মানুষকে কটাক্ষ করে শাহ বললেন, ‘‘বাংলা এখন মৌলা-মাদ্রাসা-মাফিয়ার ভূমিতে পরিণত হয়েছে।’’ অমিত শাহ বলেন, ‘‘হীরকরাজার দেশে সিনেমা’ তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল সেই সিনেমা। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্ষমতায় এসেছেন, সত্যজিৎ তখন বেঁচে নেই, থাকলে তিনি ‘হীরকরানির দেশে’ সিনেমা বানাতেন। ভাই-বোন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হীরকরানির দেশে।’’
‘‘আমি মমতাদিদি এবং আপনার ভাইপোকে বলে যাচ্ছি, যত পারেন জোর করুন, সিএএ হবেই।’’‘‘কাশ্মীরে আর অশান্তি হয় না। এখন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে স্বাধীনতার জন্য স্লোগান ওঠে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অশান্তি হয়। মোদী জমানায় এটাই সাফল্য। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের হওয়া উচিত কি না? শ্রীরামপুরের মাটিতে বলছি, রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী আপনারা ভয় পেলে পান। কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমরা নিয়েই ছাড়ব।’’ ‘‘গ্যারান্টি দিচ্ছি, শ্রীরামপুর কবীরশঙ্কর বোসকে জেতান, অনুপ্রবেশকারী ছেড়ে দিন, পাখিও উড়ে এসে বসতে পারবে না।’’