হুগলি, ১৭ নভেম্বর:- দশ দিন পর মেয়ের বিয়ে। তার ঠিক আগে, বাবা এমন কাণ্ড ঘটনাবেন তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনদের। কারণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর ধোঁয়াশা। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তোলপাড় হুগলি জেলা। এই ঘটনা পোলবাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দশ দিন পর মেয়ের বিয়ে, সকালে বাবার ঝুলন্ত মৃতদেহ মিলল সোয়াখালের পাশে। পোলবার আমনান গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষ (৫৩) গতকাল সন্ধায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাতে নিজেই ফোন করে বাড়িতে জানান যে তিনি আর বেঁচে থাকতে চান না। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়ে যান ঘোষ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। বারবার পরিবারের সদস্যরা ফোন করলেও তিনি আর ফোন ধরেননি। সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেও বিশ্বজিতের কোনও খোঁজ পায়নি তাঁর পরিবার। হদিশ না পেয়ে পোলবা থানায় নিখোঁজ ডায়রি করে পরিবার। আজ সকালে আমনান গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে সোয়াখালের পাশে একটি গাছে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পোলবা থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
কী কারনে আত্মহত্যা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দিন পর বিশ্বজিতের মেয়ের বিয়ে। তার জন্য সব আয়োজন সারা। ইতিমধ্যেই প্যান্ডেল বাঁধার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিয়ে নিয়ে ঘোষ বাড়িতে চলছে তোর জোর। এই অবস্থায়, কেন তিনি আত্মহত্যা করলেন, সেই নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। কী কারণে বিশ্বজিৎ আত্মহত্যা করলেন, তা ধন্দে রয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সব আয়োজন হয়ে গেলেও মেয়েকে বিয়েতে দেওয়ার জন্য গয়না কেনা হয়নি। সেই কারণে দুশ্চিন্তা ভুগছিলেন। তা থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মৃতের দিদি জবা ঘোষ বলেন. ‘ভাইয়ের কোনও সমস্যা ছিল, এমনটা আগে কোনওদিন বলেনি। বিয়ের আর দশ দিন বাকি। টাকা পয়সা প্রয়োজন কিনা সেটা জিজ্ঞাসা করায় বলেছিল অসুবিধা হবে না। সব আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করা হয়ে গিয়েছে। কেন এমন ঘটনা ঘটাল, তা বুঝতে পারছি না। টাকার অভাব থাকলে বলতে পারত।’ মৃতের ভগ্নিপতি সুমন্ত সুর বলেন, ‘গতকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারকে নিজেই ফোন করে জানান যে বেঁচে থাকতে চান না। বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলে ফোন কেটে দেন। মাস দেড়েক ধরে মানসিক অবসাদে ছিলেন। ঠিক কী নিয়ে অবসাদ তা বোঝা যেত না।’