এই মুহূর্তে জেলা

সাংবাদিকদের মুখোমুখি ইয়েচুরি, গণতান্ত্রিক ভারত গড়তে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরানোর ডাক।

হাওড়া, ৩ নভেম্বর:- ৩ নভেম্বর থেকে আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির তিন দিনব্যাপী বর্ধিত অধিবেশন পার্টির হাওড়া জেলা কমিটির দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে বর্ধিত অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। অধিবেশনের সূচনা করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন মহ: সেলিম সহ পার্টির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এদিন পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সীতারাম ইয়েচুরি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তৃণমূল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস একটি অ্যান্টি ডেমোক্রেটিক এক্টিভিটি পার্টি। এই দলটি বিজেপির বিকল্প কোন সময়ই ছিলনা, হতে পারবেও না। পলিটিকাল আইডোলজিক্যাল প্রজেক্ট রয়েছে আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে। এদের হারাতে গেলে বিকল্প পলিটিকাল আইডিওলজিক্যাল চিন্তাধারা থাকার প্রয়োজন। তৃণমূল কংগ্রেস আগেও এনডিএ’র সহযোগী ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল যদি অন্যান্য দলের মতো ইন্ডিয়া জোটে আসে বিজেপিকে হারানোর জন্য তাহলে ঠিক আছে।

এতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলায় বিজেপির বিকল্প হল বামফ্রন্ট ও তার সহযোগী দল। তৃণমূল কোনমতেই বিকল্প হতে পারে না। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি ভরসা প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, আমাদের সঙ্গে কতদিন থাকবে না বা না থাকবে তার জবাব দেবে জনতা। যখন এখন বলছে লড়াই করতে চাই তখন করুক। কোথায় কতদিন থাকবে তা ওরাই বলতে পারবে। মহুয়া মৈত্রের ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে ইয়েচুরি বলেন, দশ বছরের বেশি সময় ধরে আমি রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির সদস্য ছিলাম। চার পাঁচবার ছাড়া কখনও এথিক্স কমিটিতে আসেনি। কোথাও এত তাড়াতাড়ি আসা হয় না। এখানে অভিযোগ পাওয়ার পরই এত তাড়াতাড়ি এথিক্স কমিটির দুটি বৈঠক হলো এটা দেখে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি। এটা দেখে হাসিও লাগছিল। বুঝতে পারছিলাম না এত তাড়াহুড়ো কেন করছে। কারণ এখানে আদানি যুক্ত রয়েছে। সেই কারণে এত তাড়াহুড়ো। তদন্তে আপত্তি নেই তবে তদন্ত করতে গেলে ঠিকভাবে করা হোক। প্রতিটি কমিটির তদন্তের আলাদা পদ্ধতি আছে। আমি আট বছর পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম কমিটির লক্ষ্য কাউকে হয়রান করা যেন না হয়।

তাদের উচিত সঠিকভাবে তদন্ত করা এবং দেখা উচিত কি ঘটেছে। ইডি সিবিআইকে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবহার করছে এ ব্যাপারে ইয়েচুরি বলেন, যেখানে দুর্নীতি সেখানে তদন্তকারী সংস্থা কাজ করুক, দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরুক। এ ব্যাপারে আমাদের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু দুর্নীতির নাম করে বিরোধীদের হয়রানি করা এতে আপত্তি আছে। যখন দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপিতে কেউ চলে যায় তখন সে ছাড় পেয়ে যায়। এই ভাবেই তদন্তকারী সংস্থাকে অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। ভোট না হলেও বিরোধীদের দুর্বল করতে চাইবে বিজেপি। অনেক জায়গাতেই বিজেপি এমন নিয়ম তৈরি করেছে যে রাজ্যে যে কেউ জিতুক না কেন সরকার বিজেপি বানাবে। গোয়া, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর-পূর্ব কয়েকটা রাজ্যে বিজেপি ভোটে হেরেছে কিন্তু জয়ীদের কিনে সেখানে সরকার গড়েছে। এটা গণতন্ত্রের নামে মজা কুড়নো। এটাও একটা ভ্রষ্টাচার। এদিন ইন্ডিয়া জোটে থাকা প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশ থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা। কেন্দ্রে পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে জুডিশিয়ারি, ইলেকশন কমিশন, সিবিআই, ইডি প্রত্যেককে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে গেলে বিজেপিকে দূরে রাখতেই হবে। সেই কারণে আবেদন করা হয়েছে যারা “ইন্ডিয়া” জোটে আসতে চায় তারা আসবে। দেশকে বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা। নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ভারত গড়তে গেলে বিজেপিকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার থেকে সরাতে হবে।