কলকাতা, ৪ জুন:- ওড়িশার ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান না করে দোষারোপের নোংরা রাজনীতিতে নেমেছে বিজেপি। বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির পরেও ক্ষমা না চেয়ে শুরু হয়েছে লাশের রাজনীতির খেলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমার,লালু প্রসাদ যাদবের আমলে রেল দুর্ঘটনায় কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে তার মনগড়া পরিসংখ্যান বের করে প্রচারে নেমেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির এই লাশের রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি করমন্ডল এক্সপ্রেস এর দুর্ঘটনার জন্য তিনি পুনরায় রেলের গাফিলতি এবং সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করেছেন। রবিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কালকে গেছি আপনারা শুনেছেন একটা খারাপ কথা বলিনি। আমি কোনও আক্রমণ করিনি। রেলমন্ত্রী আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি বললে আরও বলতে পারতাম। কারণ রেলটা আমি হাতের তালুর মতো জানি।
সিগন্যালিং সিস্টেম কেউ দেখেই না। অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না কেন। রেল বাজেটও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলভবনও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলকে বেচার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্র্রী অভিযোগ করেন, যারা ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাইরে গিয়েছিলেন। তাঁরা সব ট্রমায় আছেন। ভালো করে ওষুধও দেওয়া হয়নি। মাথায় একটা পট্টি বাধা হয়েছে। আমরা বাসে-ট্রেনে নিয়ে এসেছি। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। বেলচা দিয়ে কেটে অর্ধেকটা বডি বের করেছে। দেখা যায়না চোখে। মানুষ মনে গেলেও দুঃখ যায় না। তার থেকেও কষ্ট কখন বডি পাব। কখন চিহ্নিত হবে ইত্যাদি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমি ভেবেছিলাম এই সময়টা রাজনৈতিক কথা বলব না।হঠাৎ আমার কাছে একটা ম্যাসেজ এল।
তাতে তাঁরা একটা লিস্ট দিয়েছে আমার সময় কত মারা গেছে রেল দুর্ঘটনায় আমি যে আধুনিক করে দিয়ে এসেছিলাম রেলকে তার জন্যই দুর্ঘটনা কমেছে। যে তথ্য ওরা দিয়েছে ওটা ভুল ইনফরমেশন। আমি তো এখন রেলমন্ত্রকে নেই।’ এরপর বিজেপিকে নিশানা করে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, ‘আমি যদি জিজ্ঞাসা করি গোধরায় কতজন মারা গিয়েছিল। আমি তো সব করে দিয়ে এসছিলাম বলে রেলটা স্বাভাবিক ছিল। যাদের দায়িত্ব ছিল নৈতিকতার তারা দায়িত্ব না নিয়ে আমার সময়ে কত মরেছে হিসেব করতে বসেছে। সেই সময় চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগানো হয়েছিল। কতজন মানুষ মারা গিয়েছিলেন? আপনাদের সময় অনেক দুর্ঘটনা হয়েছে। আমরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি কারণ দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এত মানুষের মৃত্যুর পর তো ক্ষমা চাইতে পারতেন। এটা সম্পূর্ণ গাফিলতি। কোনও কো-অর্ডিনেশন ছিল না। না হলে ৮-১০ মিনিটে কলিশন হতে পারে না।’