এই মুহূর্তে কলকাতা

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দিন ঘোষণা।

কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর:- অঙ্গীকার পূরণের দিকে আরেক ধাপ এগোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উৎসবের মুখেই বড় সুখবর ঘোষনা করা হলো রাজ্যের শিক্ষক পদপ্রার্থীদের জন্য। ঘোষনা করা হল প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দিনক্ষণ। একই দিনে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে উচ্চ প্রাথমিক,শারীরিক শিক্ষা ও কর্মশিক্ষা বিভাগেও নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। নিয়োগ করা হবে নবম,দশম এবং একাদশ,দ্বাদশ স্তরের শূন্য শিক্ষক পদে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক পদ পূরণের জন্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। পুজোর আগেই সমস্ত ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। যাঁরা দিনের পর দিন শহরের রাজপথে বসে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাঁদের জন্যও এদিন সুখবর দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আদালতের অনুমতি পেলেই মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো ওই প্রার্থীদের ইন্টারভিউ এর প্রক্রিয়া শুরু করবে কমিশন। পুজোর আগেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন পর্ষদ চেয়ারম্যান গৌতম পাল।তিনি জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরবর্তী পরীক্ষা হবে ১১ ডিসেম্বর। ১১ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের জন্য এই পরীক্ষা হবে। রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে পুজোর ছুটির পর। অর্থাৎ, লক্ষ্মীপুজোর পর এবং কালীপুজোর আগে। কবে থেকে পোর্টাল খুলবে, তার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। পোর্টাল যে দিন খুলবে, সে দিন থেকেই চাকরিপ্রার্থীরা পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। পোর্টালের মাধ্যমেই চাকরিপ্রার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। সোমবার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই টেট হবে।

তবে দিন ঘোষণা করেননি তিনি। জানিয়েছিলেন, পর্ষদের সঙ্গে শিক্ষা দফতরের বৈঠকের পর টেটের দিন স্থির করা হবে। সোমবার বিকেলেই তারিখ জানিয়ে দিল পর্ষদ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই গৌতম পাল জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে প্রতি বছর নতুন করে টেট পরীক্ষা হবে। সেই অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর পরীক্ষার আয়োজন করা হল। এবার থেকে প্রতিবছরই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে ফের জানিয়েছেন পর্ষদ চেয়ারম্যান। পাশাপাশি পুজোর ছুটির আগেই শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা ঘোষনা করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা ঘোষণা করেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। সোমবার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ বোর্ড গঠন সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেলে ১৫৮৫ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। নিয়োগ হবে ১১ টি বিষয়ে। এ ছাড়া, কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষায় নিয়োগের জন্য যাঁরা রাস্তায় আন্দোলন করছেন, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানানো হয়েছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, কোন স্কুলে কত শূন্যপদ, তা বিকাশ ভবনের তরফ থেকে জানানো হবে। তারপরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে কমিশন। সেই তালিকাও মিলবে পুসজোর আগেই। শারীর শিক্ষায় শূন্যপদের সংখ্যা ৮২৪ ও কর্মশিক্ষায় শূন্যপদ ৫৮৫। এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য যে সুপার নিউমেরিক পোস্টের কথা ঘোষণা করেছিলেন, সেই সব পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও শীঘ্রই প্রকাশ হবে বলে জানানো হয়েছে। নবম ও দশমে ১৯৩২ টি ও একাদশ ও দ্বাদশের ২৪৭ টি শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে। সব মিলিয়ে পুজোর আগেই চাকরি প্রার্থীদের সুখবর দিতে চলেছে কমিশন। এসএসসির আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে গিয়ে তাঁদের দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনি জটিলতায় আটকে থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়ার জট খুলতে এর আগে দু দফায় আন্দোলনরত প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারও বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ওই প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।