কলকাতা, ১৫ সেপ্টেম্বর:- রাজ্যে গত দুবছরে চোরা শিকারে একটিও গণ্ডারের মৃত্যু হয়নি। রাজ্য সরকারের সার্বিক নজরদারিতে রাজ্যে সব রকমের পশুর সংখ্যাই বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ১৯৩২ সালের বেঙ্গল রাইনো কনজারভেশন অ্যাক্ট প্রত্যাহার করতে আনা এক বিলের ওপর আলোচনা শেষে জবাবি ভাষণে তিনি বলেন, বন্য প্রাণী ও বনজ সম্পদ সংরক্ষণে অরণ্য এলাকায় বনসুরক্ষা কমিটি করা হয়েছে। সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে হাতি, গণ্ডারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বিগত ৪ বছরে ৫৩ টা গন্ডার জন্মেছে। বর্তমানে রাজ্যে গণ্ডারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৪৭। পাশাপশি হাতি, বাঘের হানায় মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিনশোর বেশি মানুষকে বনরক্ষীর চাকরি দিয়েছে বলে বনমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবারের ৩৫৮ জনকে বনরক্ষী হিসাবে চাকরি দেওয়া ছাড়াও আর্থিক ক্ষতিপূরন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে ৬৬ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরনের অঙ্ক আড়াই লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এই হিসাবে এখনও পর্যন্ত ৫৭৫ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বাকি ৫০১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা অর্থ দপ্তরের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। গত এক বছরে তল্লাশী চালিয়ে এক হাজারটি লরি ভর্তি চোরাই কাঠ ও দুই লরি চন্দন কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে বলে মন্ত্রী দাবি করেন। স্বাধীনতা পূর্ব সময় গন্ডার সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি আইন বাতিল করতে বিধানসভায় সংশোধনী আইনটি পেশ করা হবে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,স্বাধীনতার আগে অবিভক্ত বাংলায় গন্ডার সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১৯৩২ সালে একটি বিল বিধানসভায় পাশ করানো হয়েছিল। ১৯৩২ সালে তৈরি হওয়া ওই আইনের গুরুত্ব চলে যায় ১৯৭২ সালেই। সেই সময়, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী তাঁর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ নিয়ে একটি নতুন আইন পাশ করে। নতুন আইনে সমস্ত রকম বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের কথা বলা হয়। দেশের সর্বত্র একই নীতি নেওয়ার জন্য শক্তিশালী আইনও তৈরি করে কেন্দ্র। এর পরে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ব্রিটিশ আমলের আইনের আর কোনও গুরুত্ব ছিলই না। বাংলার পৃথক গন্ডার সংরক্ষণ আইন অকেজো হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি বন দফতর এই আইনটি তুলে দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে।