কলকাতা, ১১ এপ্রিল:- হাঁসখালি কাণ্ডে রাজনীতির রঙ লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় কে বড় করে দেখানো হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। সোমবার পূর্ব কলকাতায় নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা মিলন মেলা প্রাঙ্গণের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী হাঁসখালির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে কেন ঘটনার পাঁচ দিন পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হল মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন হাঁসখালির নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তর প্রেম ঘটিত সম্পর্ক ছিল। বাড়ির লোকেরা এবং প্রতিবেশীরাও সেটা জানতেন। মমতা বলেন, ‘‘আপনি রেপ বলবেন, না কি প্রেগনেন্ট বলবেন, নাকি লভ অ্যাফেয়ার বলবেন…না কি শরীরটা খারাপ ছিন, না কি কেউ ধরে মেরেছে… আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটি কী? ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। মেয়েটার নাকি লাভ অ্যাফেয়ার ছিল শুনেছি।’’
এর পর ডিজি-র কাছে জানতে চান, তিনি ঠিক বলছেন কি না। পর ক্ষণেই মমতা মন্তব্য করেন, ‘‘মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?’’ মুখ্যমন্ত্রী এ-ও দাবি করেন,‘‘কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ?’তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, অপরাধকারীর শাস্তি হবে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক রঙ না দেখেই অপরাধকারী শাস্তি হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন মিলন মেলা প্রাঙ্গণের নাম বদল করে রেখেছেন বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণ।রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের অধীনস্থ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রেড প্রমোশন অর্গানাইজেশনের তত্ত্বাবধানে মিলনমেলার খোলনলচে বদলে দিতে কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রে খবর, মোট ২২ একর জমিতে ২টি প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়েছে।
নতুনভাবে তৈরি মিলন মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। তৈরি হয়েছে এক লক্ষ বর্গফুটের দু’টি আলাদা অডিটোরিয়াম, ফুডকোর্ট, মাল্টি গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। যেখানে প্রায় ১২০০টি গাড়ি একসঙ্গে রাখা যাবে। এছাড়াও থাকছে ইস্পাতের বিশ্ব বাংলা স্ট্যান্ড। যার উচ্চতা ৬০ ফুট। এই স্তম্ভের মাথায় লাগানো হয়েছে বিশ্ব বাংলা গ্লোব। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে থাকছে নানান ধরনের লাইট ও সাউন্ড। নতুনভাবে মিলন মেলা প্রাঙ্গণ গড়ে তুলতে খরচ হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা।তিন বছর কাজের পর মিলন মেলার মেকওভার শেষ। নতুন রূপে সোমবার সাধারনদের জন্য খুলে গেলো মেলা প্রাঙ্গণ। মিলনমেলার দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে মূল দুটি গেট রয়েছে। সায়েন্স সিটির গেটের দিকে তৈরি করা হয়েছে বিশ্ব বাংলা টাওয়ার। এই স্তম্ভের মাথায় লাগানো হয়েছে বিশ্ব বাংলা গ্লোব। মিলন মেলার অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন। পাশাপাশি দুটি প্যাভেলিয়নের সামনে প্রজেক্টরে প্রতিফলিত হবে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যের ছবি।