এই মুহূর্তে কলকাতা

মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত , নোনা জলে ধান চাষ নতুন করে এনে দিয়েছে লক্ষী চাষীদের ঘরে।

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর:- বাঁধ ভাঙা নোনা জলে ডুবে যাওয়া জমিতে মাথা দোলাচ্ছে সোনালী ধান! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই স্বপ্ন আজকে বাস্তবায়িত। মূলত তারই উদ্যোগ এবং পরিকল্পনায় বন্যা প্লাবিত এলাকায় নতুন প্রজাতির নোনা স্বর্ণ ধান চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নোনা জলেও যে ধান চাষ সম্ভব। সরকারের বিতরিত সেই ধান নতুন করে লক্ষ্মী এনে দিয়েছে চাষীর ঘরে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় ব্যাপক ফলন হয়েছে স্বর্ণ ধানের। সেই ধান থেকে উৎপন্ন চাল আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজারে এসেছে সম্প্রতি। বিধাননগরের সরস মেলায় আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজারে আনা হয়েছে সেই চাল। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই চাল নিয়ে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ সকলের উৎসাহ তুঙ্গে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে উপকূলবর্তি জেলায় ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের নোনা স্বর্ণ ধানের বীজ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

জুন মাসের ১৭ তারিখ নবান্ন সভাগৃহে মুখ্যমন্ত্রী নতুন কৃষকবন্ধু অনুষ্ঠানে এই বীজ তুলে দেন। উত্তর ২৪ পরগনার প্রায় ২ লক্ষ বিঘা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী ব্লকগুলিতে নোনা স্বর্ণ তুলে দেওয়া হয়। প্রত্যেক চাষির হাতে বিঘাপ্রতি ৬ কিলোগ্রাম বীজ এবং তার সঙ্গে জিঙ্ক ও বীজ পরীক্ষার রাসায়নিকও দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১২২০ মেট্রিক টন নোনা স্বর্ণর বীজ দেওয়া হয়। অবস্থা সামাল দিতে উপকূলবর্তী এলাকার ১৮৪০ কমিউনিটি নার্সারি থেকে ‘কমিউনিটি সিডবেড’ বা বীজতলা তৈরি করে দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করার কয়েক মাসের মধ্যেই এই নোনা স্বর্ণর বীজ থেকে ব্যাপক ফলন হয় সুন্দরবন এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদেও ব্যাপক ফলন হয়েছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাজ্যের কৃষিবিজ্ঞানীরা স্থানীয়ভাবে এই ধরনের বীজ তৈরি করেছেন, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে জমি নোনাজলে নষ্ট হলেও ধান চাষ করা যায়। বীজ দেওয়ার পাশাপাশি চাষিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেন বিজ্ঞানীরা। সেইমতো নোনা মাটিতেও ধান চাষে দেশের মধ্যে নজির তৈরি করছে রাজ্য।