মহেশ্বর চক্রবর্তী, ২৫ নভেম্বর:- করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে বিশ্বজুড়ে ত্রাহি ত্রাহি রব। এই রখম এক পরিস্থিতি থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে গাছ বসাতেই হবে বলে অভিমত পরিবেশবিদদের। সারা দেশজুড়েই একপ্রকার সবুজায়নের কর্মসূচি চলছে। সেই মতো রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসন গাছ বসানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। হুগলি জেলা প্রশাসনও ব্যতিক্রম নয়। হুগলি জেলার আঠারোটি ব্লকেই সবুজায়নের গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং প্রতিটি ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতে পঞ্চাশ হাজার চারা গাছ বসানো হয় বলে জানা যায়। চলতি বর্ষার মরসুম থেকে এই কর্মসূচি চলছে। হুগলি জেলার আরামবাগ ব্লকে পনেরোটি পঞ্চায়েত রয়েছে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে পঞ্চাশ হাজার চারা গাছ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় এই চারা গাছগুলিকে দেখাশোনার জন্য কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে বাঁশ ও জাল দিয়ে ব্যারিকেড করাও ব্যবস্থা করা। আরামবাগের প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় গেলেই কোথাও রাস্তার ধারে আবার কোথাও সরকারি খাস জায়গায় ও পুকুর পাড়ে চারা গাছ লাগানো হয়েছে। প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, প্রতি পঞ্চায়েতে চারা গাছ লাগানোর জন্য প্রায় বারো লক্ষ টাকা নাকি বরাদ্দ করা হয়। আগামী ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে এবং পৃথিবীকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তুলতেই এই উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন।
এই বিষয়ে আরামবাগের গৌরহাটি এক নম্বর অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দা তন্ময় চক্রবর্তী জানান, চারা গাছ বসানোর বিষয়ে আগে এই রখম উদ্যোগ আগে কখনো নেওয়া হয়নি।তবে প্রশাসনের নির্দেশে কয়েক হাজার গাছ আমাদের এই অঞ্চলে লাগানো হয়েছে। শুধু আমাদের অঞ্চলই নয় আশপাশের সমস্ত অঞ্চলেই চারা গাছ লাগানো হয়েছে। যদি ৭০% গাছ বেঁচে বড়ো হয় তাহলে বহু উপকার হবে সাধারণ মানুষের।পরিবেশ দুষন মুক্ত হবে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা অনেকটাই জয়ী হবো। জেলার ব্লক প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, সবুজায়নের জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতকে গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। গাছ লাগিয়েই দায় সারলে হবে না। তার উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষনের উপর গুরুত্ব আরোপ করার পাশাপাশি এলাকার মানুষকেও গাছ লাগানো বিষয়ে উৎসাহিত করতে হবে। এই বিষয়ে আরামবাগের বিডিও কৌশিক ব্যানার্জী জানান, প্রতিটি পঞ্চায়েতেই গাছ লাগানো হয়েছে। দেখাশোনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে মনুষ্য প্রজাতিকে বাঁচাতে হলে গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছকে বাঁচাতেই হবে। তাই উচ্চ প্রশাসনের নির্দেশে প্রতিটি অঞ্চলে চারা গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, হুগলি জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতেই সবুজায়ন তথা চারা মাছ লাগানোর যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিলো তা অনেকটাই সফল। প্রতিটি পঞ্চায়েতই গুরুত্ব সহকারে বর্ষার মরসুমে গাছ লাগায় এবং তার সঠিক পরিচর্যার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করে। এই বিষয়ে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভুমি কর্মাধ্যক্ষ শুনিল সামন্ত জানান, বিশ্ব উষ্ণায়ন এর পরিপ্রেক্ষিতে আরামবাগ ব্লকে মোট সাড়ে সাত লক্ষ চারা গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই পরিকল্পনা রূপায়ণের আমরা অনেকটাই সফল। আরামবাগ ব্লক প্রশাসনের সক্রিয় সহযোগিতায় পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে পনেরোটি পঞ্চায়েতে চারা গাছ লাগানো হয়। পাশাপাশি এই চারা গাছ গুলির পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়। যদি গাছগুলি কে বাঁচানো যায় তাহলে পরিবেশ অনেকটাই সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। আমরা চারা গাছ লাগানো কর্মসূচি আগামী দিনেও জারি রাখবো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে আমাদের এই কাজ লাগাতার চলবে। সব মিলিয়ে হুগলি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে চারা গাছ লাগানোর উদ্যোগ সাধুবাদ জানায় জেলাবাসী।