এই মুহূর্তে জেলা

হেলে গিয়েছে বেলিলিয়াস পার্কের নির্মীয়মান টাওয়ার।

হাওড়া, ২৩ নভেম্বর:- সামান্য হেলে গিয়েছে হাওড়ার বেলিলিয়াস পার্কের নির্মীয়মান টাওয়ার। বিষয়টি পরীক্ষার জন্য শিবপুর আইআইইএসটি অথবা যাদবপুর ইউনিভার্সিটির মতো নিরপেক্ষ সংস্থার আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো হাওড়া পুরসভা। দেশের অন্যতম উঁচু নির্মীয়মাণ টাওয়ার হেলে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মধ্য হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় বেলিলিয়াস পার্কে তৈরি হচ্ছে এই টাওয়ার। বিপদের সম্ভাবনা থাকায় ওই টাওয়ার পরিদর্শন করেছেন পুরসভার প্রতিনিধি দল। বিপদ রুখতে সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। মধ্য হাওড়ার বেলিলিয়াস পার্কে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক বিনোদন পার্ক। হাওড়া পুরসভার লিজ দেওয়া জমিতে প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পার্ক তৈরি করছে এক বেসরকারি সংস্থা। এখানেই তৈরি হচ্ছে দেশের অন্যতম উঁচু টাওয়ার। এই টাওয়ারের মাথায় থাকবে ঘূর্ণায়মাণ রেস্তোরাঁ। দেড় মাস আগে নির্মীয়মান এই টাওয়ারটি সামান্য হেলে যায়। এই খবর জানতে পেরে হাওড়া পুর প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী সহ প্রতিনিধিরা পার্কে গিয়ে টাওয়ারটি পরিদর্শন করেন। সুজয় চক্রবর্তী জানান, কর্তৃপক্ষকে নোটিশ করে সমস্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট নেওয়া হবে। এছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অথবা শিবপুর আইআইইএসটি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে টাওয়ারটি পরীক্ষা করানো হবে। বিপদ যাতে না ঘটে তারজন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্মাণকারী সংস্থার কর্ণধার রামরতন চৌধুরী জানান, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

সামান্য অংশ (পয়েন্ট আট ডিগ্রি) হেলে পড়েছে। টাওয়ারটি হেলে পড়ার বিষয়টি নজরে আসতেই বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাদের পরামর্শমতো টাওয়ারের নিচের অংশে কংক্রিটের পিলার দিয়ে আরো মজবুত করা হচ্ছে। বর্তমানে আর বিপদের কোন সম্ভাবনা নেই বলে তিনি দাবি করেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৬ মাসের মধ্যেই পার্কটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে টাওয়ারটি হেলে যাওয়ার খবর জানার পর হাওড়া পুরনিগমের একটি দল সেই টাওয়ারটি দেখতে যান। সেই টিমে পুর প্রশাসকমন্ডলীর প্রধান ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী, উপপ্রধান সহ অন্যান্য সদস্যরা, হাওড়া পুরনিগমের বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টে ইঞ্জিনিয়াররা ছিলেন। এ ব্যাপারে সুজয় চক্রবর্তী জানান, যে সংস্থার তত্তাবধানে ওই টাওয়ারটি তৈরি হচ্ছে তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। টাওয়ারের কি সমস্যা এই নিয়ে এদিন ওনাদের জানানো হয়। এ ব্যাপারে সেই সংস্থাকে লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আইআইইএসটি অথবা যাদবপুর ইউনিভার্সিটি মত নিরপেক্ষ এক এজেন্সির আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের রিপোর্ট নেওয়া হবে। তারপর সেই রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে মানুষের ক্ষতি না হয় সেই ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করা হবে।

এ ব্যাপারে যে সংস্থা এই টাওয়ারটি তৈরি করছে তারা সমাধানের জন্য কাজ শুরু করেছে। টাওয়ারটি গ্রাউন্ড সাপোর্ট এর জন্য ৫০ ফুটের ৬টি বিমের দিচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, টাওয়ারটি হেলে গিয়ে যাতে বিপজ্জনক কোন কিছু না হয় তার জন্য প্রিভেন্টিভ মেজার হিসেবে বিমের সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন পিলারটি ০.৮ ডিগ্রি হেলে গিয়েছে। এর উপরের দিকে কোনো কাজ হচ্ছেনা। টাওয়ারটি হেলে যাওয়ার জন্য বেসের কাজ হচ্ছে। এ ব্যাপারে টাওয়ার তৈরি সংস্থার মালিক রতন চৌধুরী জানিয়েছেন, এটি বিপজ্জনক কোনও ব্যাপার নয়। টাওয়ারটা ০.৮ ডিগ্রি হেলে গেছে। তা জানতে পেরে এক্সপার্ট টিমকে দিয়ে জরিপ করানো হয়েছে। ওরা সার্ভে করে যে রিপোর্ট দিয়েছে করে দিয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এখনো প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। কি কারণে পিলারটি হেলে গিয়েছে তা জানা যায়নি। তবে এটা ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশানুযায়ী তৈরি হয়েছে। ভয়ের কোনও ব্যাপার নেই।