এই মুহূর্তে জেলা

বন্যায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি আরামবাগ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে’র।

আরামবাগ, ৩০ অক্টোবর:- ২০২১ সালের ভয়াবহ বন্যায় আরামবাগ মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাককে যেমন প্লাবিত করেছিল, তেমনিই আরামবাগ পুরসভার দৌলতপুর এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত করেছিল গোটা দৌলতপুরকে। মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল বাড়ির ছাদে, অন্যের বাড়িতে, অনেকে আশ্রয় নিয়েছিল ত্রাণশিবিরে। বন্যায় যেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল মানুষের ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে জমির ফসলেরও। বাঁধ ভেঙ্গে জল ঢুকে ছিল স্কুলেও। ভয়ংকর বন্যায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হুগলির আরামবাগ দৌলতপুরের আরামবাগ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে’র। বন্যার জল ঢুকে সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। বাঁধ ভেঙে গোটা স্কুলের একতলা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে স্কুল সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার, ডেস্কটপ, কিবোর্ড, টিভি,আলমারি, বেঞ্চ, বই খাতা, রান্নার গ্যাস সহ বিভিন্ন জিনিস জলে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। সেই সাথে স্কুলের একতলার ক্লাসরুম গুলির মধ্যে কাঁদায় ও বালিতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্কুলজুড়ে কেবল ধ্বংসের চিত্র।

অন্যদিকে এই স্কুলের নাইট গার্ড মনোহর দুয়ারী বলেন, বন্যার জলে পুরো এলাকা প্লাবিত করে দিয়েছিল। আমাদের স্কুলের মধ্যেও জল ঢুকে সমস্ত কিছু স্কুল সরঞ্জাম সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট করে দিয়েছে। যেদিন বন্যা হয় সেইদিন আমি রাত্রে স্কুলে ছিলাম, বের হতে পারেনি স্কুল থেকে। বন্যার পাঁচদিন পর আমাকে আমার ছেলে এখান থেকে বাড়ি নিয়ে যায়। সমস্ত কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে, এখন আমাদের স্কুলের ক্লাস রুম গুলির পরিস্কারের কাজ চলছে। কেউ যদি এই প্রতিবন্ধী স্কুলকে বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে খুবই উপকৃত হবো। স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য মহাদেব দে জানান এ বছর বন্যায় স্কুলের সমস্ত কিছুই ডুবে গেছে। সেলাই মেশিন থেকে শুরু করে কম্পিউটার বই খাতা সমস্ত কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। বর্তমানে স্কুল পরিষ্কারের কাজ চলছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এই প্রতিবন্ধী স্কুলে মোট ৯৬ জন বিশেষ প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করে।

বারোজন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী আছেন। এরা সবাই এই সব প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রীদের সার্বিক বিকাশে সাহায্য করেন। বেসরকারি স্কুলটি সম্পুর্ন ভাবে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ও আরামবাগ পৌরসভার সামান্য অনুদানে চলে। এলাকার মানুষের দাবী এই প্রতিবন্ধী স্কুলটি সরকারী নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হোক। সরকারি নিয়ন্ত্রণে হলে প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারবে। এই বন্যার পর কিভাবে স্কুল শুরু হবে সেই নিয়ে চিন্তায় অস্থির পরিচালন কমিটি। এই বিষয়ে আরামবাগ পৌরসভার প্রশাসক স্বপন নন্দী জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো স্কুলটিকে বাঁচাতে। আমরা পাশে আছি। এখন দেখার সমাজের এই বিশেষ চাহিদা সম্পর্ন ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলটিকে বাঁচাতে কোনও স্বহৃদয় ব্যক্তি বা সরকার কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে কিনা।