এই মুহূর্তে জেলা

২০১৭ সালে ভাবা দীঘিতে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে হেনস্তার ঘটনায় গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা।

হুগলি, ২১ অক্টোবর:- হুগলি জেলার ভাবাদিঘির রেল জট এখনও কাটেনি। স্বাভাবিক ভাবেই তারকেশ্বর থেকে গোঘাট হয়ে বিষ্ণুপুর যাওয়ার রেললাইন তৈরি কাজ কয়েক বছর ধরে থমকে রয়েছে। কলকাতা কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে হেনস্থার অভিযোগে এবার গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা তথা গোঘাট ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মৃণাল আলু। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে তার বাড়ি থেকেই থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।থানাতেই দীর্ঘক্ষন ম্যারাথন জিজ্ঞাসা বাদের পর তাকে গ্রেপ্তার করে গোঘাট থানার পুলিশ। তাকে এদিনই আদালতে পাঠানো হয়। তৃণমূলের নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গোঘাট জুড়ে রীতিমত আলোড়ন পড়ে যায়। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর মৃণাল কে গ্রেপ্তার করায় তৃণমূলের নেতারাও অবাক হয়েছেন। উল্লেখ্য যে, গত প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল গোঘাটের ভাবা দিঘীতে গ্রামবাসীর কাছে যাওয়ার জন্য বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও তার সঙ্গী সাথীরা রওনা হয়েছিলেন। যাওয়ার পথে আরামবাগ মেদিনীপুর রাজ্য সড়কে পথে গোঘাটের উল্লাসপুর এলাকায় সিপিআইএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তার অন্যান্য সহযোগীদের হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা,

কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি তথা তৃনমুল নেতা মৃনাল আলুর নামও জড়িয়ে যায়। তাকে ভাবাদিঘী যেতে বাধা দেওয়া হয়। এর পরে তাকে রাস্তার ওপরেই তীব্র হেনস্থাও করার অভিযোগ ওঠে মৃণালের বিরুদ্ধেও। আর এই ঘটনায় তীব্র সোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্য জুড়ে। উল্লেখ্য, ভাবা দীঘি তে রেললাইন তৈরি করা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে শাসকদলের। তৎকালীন সময়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতেও তোলপাড় শুরু হয়। আর এই ঘটনার সময় ভাবাদিঘীর মানুষদের সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে গোঘাটের উল্লাসপুর এলাকায় তৃনমূলের এসব নেতা কর্মীদের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। সেই ঘটনার মৃণালের নাম জড়িয়ে পড়ে। এর পরেই গোঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিকাশবাবু। এর পরেই মামলা শুরু হয়। তদন্ত সাপেক্ষে সেই ঘটনার জেরেই এদিন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার জেরে মৃণাল বাবুকে থানা থেকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়।এই বিষয়ে গোঘাট ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তথা তৃণমূলের প্রবীন নেতা মনোরঞ্জন পাল বলেন,

উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মৃণাল বাবুকে ফাঁসানো হয়েছে। ওনারা তখন এলাকায় এসে উস্কে দিয়ে যাচ্ছিলেন। মানুষকে ভুল বোঝাতে আসছিলেন। গ্রামের মানুষ জন যারা শান্তি চেয়েছিলেন তারা তাদের বাধা দেন। কারণ তারা এলাকায় অশান্তি চাইছিলেন না। তাই তারাই তাদের রুখে দাঁড়ান। এই ঘটনায় তৃণমূলের সাথে কোন যোগ ছিল না। মৃণাল দাকে ফাঁসানো হয়েছিল তখন। এ প্রসঙ্গে ধৃত তৃণমূল নেতা মৃণাল আলু বলেন,এখানে ওনারা উস্কানি দিতে এসেছিলেন। আমরা শান্তির পক্ষে। তাই গ্রামের শান্তি প্রিয় মানুষ জন ওনাদের গ্রামে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন। তাকে কেউ হেনস্থা করেন নি। তবে একজন তৃণমূল কর্মী হিসেবে গ্রেপ্তার হলাম। তাই আমি গর্বিত। গোঘাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুরানো কেস ছিল। সেই কেসেই মৃণাল আলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসা বাদ করার পর গ্রেপ্তার করা হয়। সব মিলিয়ে দাপুটে তৃনমুল নেতা গ্রেফতার হওয়ায় চাঞ্চল্য এলাকায়।