মহেশ্বর চক্রবর্তী , ১১ অক্টোবর:- হুগলি জেলার বনেদি বাড়ি ও সাবেকিনা পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হলো গোঘাটের বদনগঞ্জ পূর্বপাড়া মুখার্জি বাড়ীর দুর্গা পুজো। এই বছর তাদের এই পুজো ৫৫০ বছরের পদার্পণ করলো। এই পরিবারটি কোনও বংশপরম পরায় জমিদারি ভোগ করতো না। কিন্তু মধ্যসত্ত্বভোগি ছিলো বলে জানা গেছে। সে সব এখন অতীত ঘটনায় পরিনত হয়েছে। তবে মা দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে এক অলৌকিক ঘটনা আজও এলাকার মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। আজও এই প্রাচীন সাবেকিয়নার রীতি মেনে আম দিয়ে শোল মাছের টক দেওয়া থেকে শুরু করে চ্যাং মাছের ঝোল করে মাকে অন্ন ভোগ দেওয়া হয়। মুখার্জি পরিবার সুত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক দিন মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী আজও ভোগ রান্না করে পুজোর চারটে দিন খাওয়ানো হয়। মুখার্জি পরিবারের এক প্রবীন সদস্যের দাবী, ৫৫০ বছর আগে এক কল্পনাতীত ঘটনা ঘটেছিলো এই দরিদ্র মুখার্জি পরিবারে। নিঃসন্তান অবস্থায় মুখার্জি পরিবারে এক দম্পতি বাস করতেন।
বয়স সত্তোর বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের সন্তান হয়নি। তবে তারা মা দুর্গার ভক্ত ছিলেন। ধর্মপ্রাণ এই বৃদ্ধ দম্পতি ভগবানের নাম গান করেই বেঁচে থাকতেন। একদিন সন্ধ্যিপুরের সরকার বাড়ীর মা দুর্গার অন্ন ভোগ খেতে ইচ্ছা করে। সেখান থেকে মা দুর্গা বাগদি মেয়ের রুপ ধরে দুর্গা পুজোর সমস্ত জিনিস ও অন্নভোগের দ্রব্য সহ স্ব- শরীরের দরিদ্র মুখার্জি বাড়িতে হাজির হন। কিন্তু বৃদ্ধ দম্পতি তাকে মেয়ের মতো করে আপন করে নেয় এবং তাকে জানায়, পুজো হলেও আগামী বছর বা তারপর কিভাবে মায়ের আরাধনা হবে। তারা তো নিঃসন্তান। এই কথা শুনে মা দুর্গার আশীর্বাদে সত্তোর বছর বয়েসে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। নাম দেওয়া হয় গৌরি শঙ্কর মুখার্জি। সেই থেকেই পুজো শুরু হয়। এমনটাই জানান ওই বংশের প্রবীন মানুষ তথা পুরোহিত। এদিন গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার এই জাগ্রত মা দুর্গার দর্শন করতে যান। তিনি এই বিষয়ে মানসবাবু বলেন, মা চেয়েছেন। তাই এসেছি। মায়ের আশীর্বাদে পৃথিবী থেকে করোনা চলে যাবে।এই প্রার্থনা জানাই মা দুর্গার কাছে।