সুদীপ দাস, ১৩ জুলাই:- হুগলীর ইমামবাড়ার কাছে ইমামবাজার ১ম লেন, পচাপুকুর ধারে পৈতৃক ভিটে চুঁচুড়ায় ভূয়ো মানবাধিকার সংগঠন চালানোয় ধৃত রঞ্জন সরকারের। বাবা আয়কর দপ্তরের প্রাক্তন অধিকর্তা। ব্যান্ডেল ডন বস্ক কনভেন্ট স্কুলের মেধাবী ছাত্র রঞ্জন কোলকাতার একটি কলেজ থেকে বানিজ্য বিভাগে স্নাতক লাভ করে। ছোটবেলা থেকেই বিলাসবহুল জীবন পছন্দ করা রঞ্জনের উচ্চাকাঙ্খা ছিলো আকাশ ছোঁয়া। তাই স্নাতক লাভের পর চাকরীর জন্য চেষ্টা না করা রঞ্জন সিঁড়ি ছাড়া ছাদে ওঠার প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। প্রথম প্রথম চেনা পরিচিতদের নানা কাজ করিয়ে দেওয়া নামে শুরু হয় দু-পাঁচ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া। স্থানীয়দের বক্তব্য দিন দিন বাড়িতে টাকার জন্য নানা জনের তাগেদার পরই বাবা-মায়ের সাথে শুরু হয় অশান্তি। সেই অশান্তি থেকেই বছর কুড়ি আগে ঘরছাড়া রঞ্জনের।
এরপর যখের ধনের খোঁজে অন্যত্র পারি। তবে সেসময় মাঝে মধ্যে বাড়িতে এলেই পাড়ার লোকেরা রঞ্জনের পরিবর্তন লক্ষ্য করে। একদা সাইকেল চালানো রঞ্জন নামি-দামী গাড়ি করে বাড়িতে আসতেন। সময় সাথে সাথে রঞ্জনের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন হতে শুরু করে। লাল-নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়েই মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন রঞ্জন। নিজেকে মানবাধিকার কমিশনের শীর্ষ কর্তা বলে পরিচয় দিতেন। কিন্তু বাইরে যে রঞ্জন বহু মানুষকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলছেন প্রথমদিকে তা বুঝতে পারেননি রঞ্জন। জীবনে প্রথম দিকে দু-চার হাজার চাওয়া রঞ্জনের পা পরে লাখের কোটায়। বহু মানুষকে মূলত রেলে চাকরী দেওয়ার নাম করে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ইতিমধ্যে চুঁচুড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি (ভাড়া কিংবা কেনা) শুরু করে রঞ্জন।
শহরের একাধিক বাড়ি-অফিস ও গ্যারেজে তাঁর চারচাকার সংখ্যা বাড়তে থাকে। বছর কয়েক আগে রঞ্জনের শিকার হওয়া শুরু হয় প্রতিবেশীরাও। বিশেষত বিপদে পরা বহু মানুষকে প্রশাসনিক সহযোগীতায় উদ্ধার করার নামে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। যদিও শেষরক্ষা হলো না রঞ্জনের। সোমবার পুলিশের জালে ধরা পরলো রঞ্জন। মঙ্গলবার রঞ্জনকে দেখতে প্রতারিতদের লাইন লেগে যায় চুঁচুড়া থানায়। এদিনই রঞ্জনকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হয়। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার অর্নব ঘোষ বলেন বহু নথি উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি রঞ্জনের একাধিক চারচাকা ও বাইক আটক করা হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ। আমরা রঞ্জনকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত চালাবো।