কলকাতা , ২২ জানুয়ারি:- নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর জোড়া কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার সরগরম রাজ্য। নেতাজি জয়ন্তীর ছুটির দিনটি ফি বছর পিকনিক করে আর চিড়িয়াখানা ভিক্টোরিয়ার চক্কর দিয়ে কাটাতে অভ্যস্ত আম বাঙালি। কিন্তু এবার ২৩ জানুয়ারির ছবিটা একটু আলাদা। জোড়া ভিভিআইপির সফরকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে গোটা শহর। কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্য সরকারের মূল অনুষ্ঠান কে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির শোভাযাত্রা এই দুই কর্মসূচির জেরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই শহরে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব নিরাপত্তা দল এসে পৌছেছে। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের তরফে দুই হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হবে। নজরদারিতে কুইক রেসপন্স টিম ছাড়াও ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রন করা হবে। ইতিমধ্যেই শহরে প্রবেশের বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ন রাস্তায় শুরু হয়েছে নাকা চেকিং।
যে সব রাস্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যাবেন তারা পাশে স্যান্ড বাংকার তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে বিশেষ বিমানে কলকাতায় পৌঁছানোর পর তিনি হেলিকপ্টারে ময়দানের আরসিটিসি হেলিপ্যাডে নামবেন। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছবেন ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে। প্রথমে তিনি সেখানে আর্টিস্ট ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে একবিংশ শতকের প্রেক্ষাপটে নেতাজির চিন্তা ও দর্শনের পর্যালোচনা শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। তার সমাপ্তি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেমিনারে মূল ভাষণ দেবেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অরূপ রাহা। ভারত ছাড়া ও আমেরিকা-জার্মানি-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড-বাংলাদেশের মতো নানা দেশের নেতাজি গবেষক ও বিশেষজ্ঞরাও ওই আলোচনা সভায় অনলাইনে অংশ নেবেন। সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা, আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রাক্তন সেনানী নবতিপর ঈশ্বরলাল সিং হাসপাতালের রোগশয্যা থেকে তাঁর বক্তব্য রাখবেন। ওই অনুষ্ঠানের শেষে প্রধানমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে পৌঁছে সেখানকার প্রদর্শনী ঘুরে দেখবেন।
১৯২৬ সাল থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত নেতাজির লেখা চিঠির একটি সঙ্কলন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রকাশিত হবে। আশা সহায় চৌধুরী, সিপাই ললিত রাম, সিপাই যাদব, নায়ক পান্ডের মতো আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রাক্তন সেনানীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এছাড়া সেখানে একটি বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রমুখেরও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি ফিরে যাবেন। অন্যদিকে রাজ্যসরকার নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলাদা কর্মসূচি নিয়েছে। মূল কর্মসূচি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর শ্যামবাজার থেকে ময়দান পর্যন্ত পদযাত্রা। পুলিশ প্রশাসনের তরফে যদিও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের কোন হয়রানি যাতে না হয় তা দেখা হবে। কিন্তু অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলছে।