এই মুহূর্তে কলকাতা

ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত।


কলকাতা , ১১ জানুয়ারি:- ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত। জেলায় জেলায় ভ্যাকসিন বন্টনের কাজও মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে যাবে। করোনা টিকা বণ্টন কর্মসূচি নিয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে একথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে কেবল দু’জন মুখ্যমন্ত্রীকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই, কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরির কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। ঘটনাচক্রে দুই মুখ্যমন্ত্রীই বিরোধী দলের। সেই বৈঠকে মমতা জানান, প্রথম পর্বে যে ৪৪ হাজার সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তাঁদের তালিকাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু খানিকটা ক্ষোভের সুরে মমতা জানান, ভ্যাকসিন বেছে নেওয়ার কোন সুযোগ রাজ্যকে দেওয়া হয়নি ।যে দুই সংস্থার ভ্যাকসিন কেন্দ্র বেছে দিয়েছে তার কার্যকারিতা নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে কিনা তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী।এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা আছে কিনা বৈঠকে তাও জানতে চান মমতা।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য তৈরি হয়েছে পরিকল্পনা। কোথায় কত ভ্যাকসিন যাবে, সব প্রস্তুতি তুঙ্গে রয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মু্খ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে যে তিন কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এই টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, দমকলকর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলার কর্মীদের প্রথম এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তবে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রী-বিধায়কদের এই করোনা ভ্যাকসিন কোনওভাবেই প্রথম পর্যায়ে দেওয়া হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ৩ কোটি মানুষ প্রথম পর্যায়ে টিকা পেলে বাকি ১২৭ কোটি মানুষ কতদিনের মধ্যে টিকা পাবেন। পাশাপাশি, দুটি নির্দিষ্ট সংস্থার টিকাতেই কেন কেন্দ্র নির্ভর করছে। তিনি জানান ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় ৬ লক্ষ চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী, আড়াই লক্ষ পুলিশ কর্মী, সওয়া এক লক্ষ সাফাই ও অন্য কর্মীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের প্রথম পর্যায়ে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একইসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেন, প্রথম পর্যায়ের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর যে ভ্যাকসিন প্রয়োজন, তা কি রাজ্যকে কিনতে হবে। এই নিয়ে একটা পরিকল্পনা প্রয়োজন। তা কেন্দ্রকেই দিতে হবে। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সবরকমের সহযোগিতার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাসও দেন। উল্লেখ্য, কাল মঙ্গলবার এই ভ্যাকসিন আসার পর আগামী শনিবার থেকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের ঘোষণা অনুযায়ী এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই সেরাম থেকে ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজের জন্য অর্ডার দিয়েছে কেন্দ্র। কাল থেকে সেই ভ্যাকসিনই বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যাবে।