এই মুহূর্তে কলকাতা

বিধানসভার সঙ্গেই হতে পারে পুরভোট , ধরে নিয়ে প্রস্তুতি কমিশনের।

কলকাতা , ১৩ ডিসেম্বর:- দেখতে চলেছে বাংলা। অন্তত তেমন সম্ভাবনাই জেগে উঠছে। কারন অবশ্যই দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা পুরনিগম নিয়ে দায়ের হওয়া এল মামলায় নির্দেশ দিয়েছে যে ১০ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচণের দিনক্ষন জানাতে হবে। সেই নির্দেশের জেরে চলতি সপ্তাহেই রাজ্যকে কলকাতা পুরনিগমের ভোটের দিনক্ষন জানাতে হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দেওয়া হবে আগামী এপ্রিল-মে মাসে যেহেতু রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে এবং এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে তাই খুব দ্রুত নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া মার্চ মাসের মধ্যে কোভিডের ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টিও র‍য়েছে। তাই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের মাস দেড়েক পরে বা একইসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন করা যেতে পারে। মনে করা হচ্ছে রাজ্যের এই আর্জি সুপ্রিম কোর্ট মেনে নিলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গেই রাজ্যে পুরসভা নির্বাচন হয়ে যেতে পারে।

শরদ কুমার সিং নামে কলকাতার এক বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন লকডাউন চলাকালীন সময়ে। সেই মামলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ই হচ্ছে রাজ্যের পুরমন্ত্রীকে কেন কলকাতা পুরনিগমের প্রধান প্রশাসক হিসাবে বসানো হয়েছে। কেন সেখানে নির্বাচন করা হচ্ছে না। প্রথম দিকে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় রাজ্যের অভিমত শুনে ফিরহাদ হাকিমকে দিয়েই কলকাতা পুরনিগমের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই সায় দিচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই মতের পরিবর্তন ঘটে। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও যদি বিহারের বিধানসভা নির্বাচন ও হায়দরাবাদের পুরনির্বাচন করানো যেতে পারে তাহলে কলকাতায় কেন ভোট করানো যাবে না। রাজ্য সরকার বা রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনের দিনক্ষন না জানালে সুপ্রিম কোর্ট সেখানে নিজের পছন্দমতন প্রশাসক বসিয়ে দেবে বলেও সেই নির্দেশে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল। সেই নির্দেশের জেরেই পুরনির্বাচন নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তথা নবান্নের অন্দরে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফিরহাদ হাকিম চাইছেন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন করিয়ে নেওয়া হোক। যদিও তাতে আপত্তি রয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। রাজ্যে এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হতে হতে কার্যত জানিয়ারি মাস গড়িয়ে যাবে। তারপর যদি ফ্রেব্রুয়ারি মাসের প্রথমে পুরনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশও হয় তাহলেও মার্চের মাঝামাঝি সময়ের আগে ভোট নেওয়া সম্ভব নয়। কারন বিজ্ঞপ্তি জারির পরে ৪৫ দিন পরে ভোট গ্রহণ করার নিয়ম। আবার মার্চ মাসের প্রথম দিকেই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষন ঘোষণা করে দিতে হবে। তাই দুটি নির্বাচন দ্রুত আলাদা আলাদা করে করার পক্ষে কার্যত কোনও রাস্তাই নেই। মূলত সময়েরই অভাব। তাই শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দেওয়া হবে বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গেই পুরনির্বাচন করিয়ে নেওয়া যেতে পারে বা রাজ্যে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পরে জুন-জুলাই মাসে নির্বাচন করা যেতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট সব শুনে যদি এই প্রস্তাবে রাজি হয় তো ভালো নাহলে যদি নিজের ইচ্ছামতন প্রশাসক বসিয়ে দেয় তো রাজ্যের তরফে কোনও আপত্তি তোলা হবে না। একই সঙ্গে মোটামুটি ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন যখনই হোক না কেন সেই সঙ্গে রাজ্যের শতাধিক পুরসভা ও পুরনিগমের নির্বাচনও করিয়ে নেওয়া হবে। সেই হিসাবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে যদি পুরনির্বাচনও এই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবে না। এমনিতেই এবারে বিধানসভা নির্বাচন ৪-৫ দফায় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যেদিন যেদিন যে যে জেলায় ভোট হবে সেদিন সেদিন সেই সব জেলায় যে সব পুরসভায় এখন প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে সেখানে সেখানে ভোটগ্রহণ করা হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।