কোচবিহার, ৬ নভেম্বর:- তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র চেহারা নিল দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের শালমারা বাজার। এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রীতিমতো বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে। বেশ কয়েকটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা যায় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক। প্রকাশ্যে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একপক্ষকে বোমা ছুড়তেও দেখা যায় বলে অভিযোগ। এছাড়াও উভয়পক্ষের মধ্যে আক্রমণ প্রতিআক্রমণ এর ঘটনায় আহত হয় উদয়ন ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তাস্কির চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে এক বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বর্তমানে অবস্থা থমথমে। যেকোনো সময়ে পুনরায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলে এসেছে। ব্লক সভাপতি নির্বাচনের পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরো চরম আকার নেয়। একদিকে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ -এর অনুগামী তৃণমূল কর্মী এবং অপরদিকে তৃণমূলের নাজিরহাট 2 অঞ্চলের প্রাক্তন সভাপতি তরণী কান্ত বর্মনের অনুগামীদের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটে। উভয়গোষ্ঠী স্বতন্ত্রভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে আসছে। এদিন শালমারা বাজারে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম আকার নেয়। এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রীতিমতো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ।
বেশ কয়েকটি মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও উভয় গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন আহত হয় বলেও জানা গেছে। উল্লেখ্য তৃণমূলের বিভিন্ন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। দিনহাটা 2 ব্লকে মির হুমায়ুন কবিরকে সরিয়ে ব্লক সভাপতি করা হয় উদয়ন ঘনিষ্ঠ বিষ্ণু সরকারকে। বৃহস্পতিবার ও দিনহাটা দুই ব্লকের নয়ারহাট ও সাহেবগঞ্জ দুই গোষ্ঠীর পৃথক পৃথক বিজয় সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। নয়ারহাটে বিজয়ের সম্মিলনীর ওই অনুষ্ঠানে উদয়ন বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা-কর্মী-সমর্থকরা কার্যত বিধায়ককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। অপরদিকে সহেবগঞ্জে তৃণমূলের বিজয় সম্মিলনী অনুষ্ঠানে ব্লক সভাপতি বিষ্ণু সরকার নয়ার হাটের ওই অনুষ্ঠানকে অবৈধভাবে ঘোষণা করেন। এর পরেই এদিন সকালে নাজিরহাট এ দুই পক্ষের গন্ডগোলকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নাই এলাকা।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুদেব কর্মকার বলেন বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে।বিধায়ক উদয়ন গ্রহ গোষ্ঠীর সাথে এলাকার তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর এই গণ্ডগোলের ঘটনায় মানুষ এদের উপযুক্ত জবাব দেবে। তৃণমূলের দিনহাটা 2 ব্লক সভাপতি বিষ্ণু সরকার বলেন দলীয় কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করেই এদিন এই গন্ডগোল এর সূচনা হয়। বেশ কয়েকজনের মোটর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ছাড়াও তাদেরকে মারধর করা হয়।তবে বিষয়টি আলোচনার মধ্য দিয়ে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।