সুদীপ দাস,১২এপ্রিল:- আজ ২৯শে চৈত্র। নীল পুজো। শাস্ত্রমতে আজই শিব-দূর্গার বিবাহের দিন। হিন্দুধর্মাবলম্বীরা আজকের দিনে সন্তানদের মঙ্গল কামনায় নীলকন্ঠ বাবার মাথায় জল ঢালেন। কিন্তু এবারের করোনা আতঙ্ক সেই নীল পুজোর উৎসবেই জল ঢেলেছেন। শৈবতীর্থ তারকেশ্বরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন শিব মন্দিরেই একই ছবি। চুঁচুড়ার প্রাচীনতম শিব মন্দির ষন্ডেশ্বরতলার মন্দির। আনুমানিক সাড়ে পাঁচশো বছরের পুরনো এই মন্দিরে নীল পুজোর দিন ভক্তদের ভিড় উপচে পরে। মন্দির ঘেঁষা গঙ্গায় স্নান সেরে বাবার মথায় জল ঢালেন অগুন্তি ভক্ত। কিন্তু এবারের চিত্রটা সম্পূর্ন আলাদা। গেট বন্ধ ষন্ডেশ্বর সহ এখানকার সবকটি মন্দিরের। হাতেগোনা কয়েকজন স্থানীয় মানুষ মন্দিরের সিঁড়িতে জল দিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালেন। নীল পুজো উপলক্ষে এখানে প্রত্যেকবছর নীল সন্ন্যাসীদেরও ভিড় হয়। দক্ষিনা স্বরূপ এক-একজনের কয়েকহাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু এবারে তাঁদেরও মুখ ভার।
মন্দির কমিটির পক্ষে সমীর মুখার্জী বলেন এবছর অদৃশ্য ভাইরাসের কাছে অদৃশ্য ভগবান হার মানলো। তবে আমাদের বিশ্বাস সামনের বছরের আগে ভগবানই জয়ী হবে। অন্যদিকে চুঁচুড়ার প্রতাপপুরে ভূবেশ্বরতলার শিবমন্দির ১৫০ বছরের পুরোনো। নীল পুজোর দিন এখানে গাজন অনুষ্ঠিত হয়। এবারে হাতেগোনা কয়েকজনের পুজো দেওয়া ছাড়া গাজন সহ সবকিছু বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সমীর সরকার বলেন এলাকাবাসীর মন খারাপ, তবে আশা করছি সামনের বছর আবার বড় করে উৎসব হবে। এদিকে ব্যান্ডেল বালিমোড় কালিতলার গৌরাঙ্গ সমিতির নীল পুজো এবারে ১০৩বছরে পদার্পন করলো। পুজো উপলক্ষে এখানে বিরাট মেলাও বসে। এখানে গাজন সহ চৈত্র সংক্রান্তিতে ঝাঁপান অনুষ্ঠিত হয়। করোনার প্রকোপে সবকিছুই বাতিল। এবিষয়ে সমিতির পক্ষে মধু বিশ্বাস বলেন জনসমাগম হতে পারে সেরকম সবকিছুই এবারে বাতিল করা হয়েছে। কথিত আছে ত্রিভূবন বাঁচাতে সমুদ্র মন্থনে ওঠা বিষ পান করে নীলকন্ঠ হয়েছিলেন ভগবান শিব ! আমরাও চাই আর প্রানবলি নয়! আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গ্রাস করুক করোনার মত বিষকে!!