হাওড়া,৬ ফেব্রুয়ারি:- হাওড়া শহরকে ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি করার লক্ষ্য নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিল হাওড়া পুরনিগম। শুক্রবার বিকেলে ২২ নং ওয়ার্ডের বেলিলিয়াস রোডে সুবল স্মৃতি সংঘের মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্রকল্পের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা, হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় প্রতিদিন প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন বর্জ্য জমা হয়। কিন্তু সেই বর্জ্য সরানোর সুপরিকল্পিত কোনও ব্যবস্থা এতদিন পর্যন্ত ছিল না। সেই কারণে এই ব্যাপারে বেশ কয়েক বছর ধরে নাজেহাল অবস্থা তৈরি হয় হাওড়া পুরসভার। এই সমস্যা কাটাতে পুরসভার ২২ নং ওয়ার্ডে প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে জঞ্জাল জমা করার জন্য বিন দেওয়া হবে। এর মধ্যে একটিতে রাখা হবে পচনশীল এবং বাকিটিতে থাকবে অপচনশীল দ্রব্য বা প্লাস্টিক।
এই বর্জ্য বহনের জন্য আনা হয়েছে ব্যাটারিচালিত ছোট গাড়ি। এর পাশাপাশি আনা হয়েছে হাতগাড়ি এবং তিন চাকার সাইকেল ভ্যান। এই গাড়িগুলিই ব্যবহার করা হবে বাড়ি বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য। এই কাজের পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ২২ নং ওয়ার্ডকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এদিন ২২ নং ওয়ার্ডে উদ্বোধন হয় ক্লিন অ্যান্ড গ্রীন হাওড়ার। এই ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন হাওড়া প্রকল্প বিষয়ে হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা বলেন, “আধুনিক শহরগুলিতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট যে পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে হাওড়ায় এতদিন সেই পদ্ধতিতে কাজ হত না। এখানে পুরানো সিস্টেমেই এতদিন সেই কাজ করা হত। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আইন ২০১৬ অনুসারে আমরা এতদিন সেই কাজ আমরা হাওড়ায় করতে পারিনি। এটা করা খুবই প্রয়োজন। হাওড়া শহরে জঞ্জাল সাফাইয়ের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এই মুহুর্তে। বেলগাছিয়া ভাগাড়েও জঞ্জাল ফেলার ক্যাপাসিটি খুবই কমে আসছে। আমরা বেশিদিন এভাবে সেখানে আবর্জনা ফেলতে পারব না। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিই হাওড়ার প্রতিটি ওয়ার্ডেই বাড়ি থেকে যদি আলাদাভাবে পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারি। এরপর এই বর্জ্য আলাদাভাবে ট্রিটমেন্ট করে অপচনশীল বর্জ্য যেমন প্লাস্টক ইত্যাদি এগুলি রিসাইক্লেলিংয়ের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পচনশীল বর্জ্য থেকে সার তৈরি করা হবে। এভাবে দৈনিক ভাগাড়ের উপর থেকে চাপ কমিয়ে ফেলা হবে। আমরা সেই কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা হাওড়া পুরসভার ২২ নং ওয়ার্ডকে মডেল পাইলট ওয়ার্ড হিসাবে চিহ্নিত করে কাজ শুরু করছি। প্রতি বাড়িতে আমরা বিনামূল্যে ২টি করে বিন দেব। সেখানে পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য পৃথকভাবে জমা করবেন পুর বাসিন্দারা। এরপর আমাদের কর্মীরা ব্যাটারি চালিত টোটো গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে এই বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। এভাবে করে আমরা নতুন এই কাজ আরম্ভ করছি। এই কাজে সফল হলে বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও এই সিস্টেমে কাজ করা হবে।”