মালদা,৯ জানুয়ারি:- বনধের দিন মালদার সুজাপুর নয়মৌজা এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের গোলমাল বাধে। এরপরই ভাইরাল হয় পুলিশকর্মীদের গাড়ির ভাঙছে এমন ভিডিও। এই ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে যায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ভাঙচুর করার ভিডিও দেখে সেই সমস্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। এই ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা অভিযোগ তুলেছেন ঠিকই। কিন্তু এব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে কোথাও কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় নি। যদিও এপ্রসঙ্গে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন , ভিডিও ফুটেজ দেখে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে , সেটি ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধর্মঘটে পুলিশের ওপর হামলা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর আগুনের ঘটনায় কালিয়াচক থানার পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের মালদা জেলা আদালতে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃতরা হলেন, আমানুল হক(৩৫),আবু সুফিয়ান(২১), ইমরান আলী(৩৮), আশরাফুল শেখ(২৬)মোঃমোহাম্মদ সানাউল্লাহ হক (২২),মোহাম্মদ মকিম শেখ(৩০) ও মোস্তাফিজুর রহমান(১৯)।ধৃতরা সকলে কালিয়াচক থানা এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার বাম বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে এনআরসি এবং সিএএ’র বিরোধীতায় বনধ্ ডাকা হয়। আর সেই বনকে ঘিরে শুরু হয় কালিয়াচক থানার সুজাপুর নয়মৌজা এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উত্তেজনা।সেদিন দুপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা । সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের গোলমাল বাঁধে। তখনই পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুঁড়ে বলে অভিযোগ। এরপর পরিস্থিতি চরম উত্তেজনায় পৌঁছায়। পরপর কয়েকটি পুলিশের গাড়ি এবং বেসরকারি কিছু যানবাহন ভাঙচুর করা হয় ও অগ্নিসংযোগ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার পিছনে পুলিশের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে। সেইমতো পুলিশের পোশাকে গাড়ি ভাংচুরের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। ভিডিওতে বন্দুকের বাঁট দিয়ে ভাঙ্গা হচ্ছে গাড়ির কাচ এমন দৃশ্য সামনে আসে। এপ্রসঙ্গে জেলা বামফ্রন্ট সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, পুলিশি নিজের থেকে মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। ভিডিওতে পুলিশকে সে গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যাচ্ছে। পুলিশের কারা আগুন ধরিয়ে দিল সেটাও পরিষ্কার নয়। আমরা চাই পুলিশ ও প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। আর যেসমস্ত পুলিশের সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। সেই সব পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে যেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করে হয়রানি করছে পুলিশ। যে সমস্ত পুলিশ গাড়ি ভাঙচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কি ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটাই এখন দেখার। সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ঈশাখান চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই এদিন অবরোধ আন্দোলন চলছিল। পুলিশ অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। পুলিশের একাংশ গাড়ি ভাঙচুর করেছে তা ভিডিও ফুটেছে ভাইরাল হয়েছে। মানুষ সবই দেখেছে ।আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। এই ভাঙচুরে আমাদের কংগ্রেসের কেউ জড়িত নয়। জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল বলেন ,পুলিশ গাড়ি ভেঙেছে সেটা মানুষ দেখেছে।এখন দেখা সেই সমস্ত পুলিশের শাস্তি হবে কি হবে না। বনধের নামে হাজার হাজার মানুষ জাতীয় সড়কে ছিল পুলিশের ওপর হামলা করেছে সমর্থনকারীরা। তবে পুলিশ কেন গাড়ি ভাঙচুর করেছে সেটা পুলিশি বলতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি দুলাল সরকার জানান,ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা দরকার। পুলিশ যদি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে সেটা ঠিক না সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। গন্ডগোলের সঙ্গে যুক্ত যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভিডিওটি দেখে সমস্ত পুলিশকর্মীদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে পরবর্তীতে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।