জেলা এই মুহূর্তে

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত বাগান বাড়িতে সরকারি আর্ট কলেজ ও সংগ্রহশালা করুক সরকার চায় কোন্নগর পুরসভা।

হুগলি,৩ ডিসেম্বর:-  কোন্নগরের মীর পাড়ায় জি টি রোড লাগোয়া গঙ্গা পাড়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত বাগান বাড়িতে সরকারি আর্ট কলেজ ও সংগ্রহশালা তৈরি করুক সরকার চায় কোন্নগর পুরসভা । টানা দশ বছর ধরে মনিষীর বাড়ি নিয়ে আইনি জটিলতা কাটিয়ে পুরসভার নামে সম্পত্তি হস্তান্তর করেছে লাখোটিয়া গোষ্ঠী। চলতি বছরের মার্চ মাসে মনিষীর স্মৃতি বিজরিত বাগানবাড়ির মালিকানা ফিরে পেয়েই জোর কদমে বাড়ির সংস্কার, গঙ্গার পাড় বাঁধানো ও বাড়ির সৌন্দর্য্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে জোর কদমে।নতুন বছরে জানুয়ারী মাসের গোড়াতেই বাড়ির আনুষ্ঠানিক উব্দোধন করতে চায় কোন্নগর পুরসভা। এদিন অবনীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজরিত বাগান বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল বাড়িতে ধোকার মুখের লোজার মরচে ধরা গেট উধাও।সেখানে নীল সাদা রঙ করে বসানো হয়েছে নতুন লোহার ফটক। বাড়িতে ঢুকে সিমেন্টের তৈরি ইট দিয়ে পারায় পাঁচ ফুটের রাস্তা সোজা গিয়ে মিশেছে অবনীন্দ্রনাথের বাগান বাড়ির মূল বাড়িতে।বাগান বাড়ির একপাশে খড়ের চালার আদলে একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে।বাগান বাড়ির ভিতরে যে কাঁঠাল গাছের নীচে বসে শিল্পী বিশ্রাম নিতেন সেই প্রাচীন কাঁঠাল গাচ্ছের চারপাশ সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।কাঁঠাল গাছের পাশেই একটি কুড়ে ঘরের আদলে একটি ঘর তৈরি করে বসানো হয়েছে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তি। বাগান বাড়ির ভিতরে যে গঙ্গার ঘাট ছিল গঙ্গার ভাঙনে সেই ঘাট বহুদিন আগেই হারিয়ে যায়।বিঞ্জান সন্মত উপায়ে পর্কো পাইলিংযের মাধ্যমে গঙ্গার ঘাট কে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে । গঙ্গার ভাঙন রুখতে পর্কো পাইলিং ও সাল বল্লার খুঁটি ব্যাভার করা হয়েছে। বাগানবাড়ির মধ্যে প্রায় সাত কাঠা জমির উপরে রয়েছে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত মূল বাড়ি।বাড়ির পুরনো আদল ঠিক রেখে ভবনের আমূল সংস্কার করা হয়েছে । ছাদের পলেস্তারা ক্সিয়ে ছাদ মেরামত করা হয়েছে।করিবরগা রঙ করা হয়েছে।বাড়ির মধ্যে থাকা ৯টি ঘরের পূর্ন সংস্কার করা হয়েছে।যে ঘরের ভিতরে বসে শিল্পী গঙ্গার উলটো দিকের পেনেটির বাগান বাড়ি দেখতেই সেই ঘরের আমূল সংস্কার করা হয়েছে।তবে দরজা জানলায় সে সময় বেলজিয়ামের কাঁচ ব্যবহার করা হলেও এখন সাধারন কাঁচের ব্যবহার করা হয়েছে।মূল ভবনের পিছনেই প্রায় ৮কাঠা জমির উপরে ছিল হেয়ার সাহেবের সুইমিং পোল। নষ্ট হয়ে যাওয়া সেই সুইমিং পোলের সংস্কার করে সেখানে রঙীন মাছ ও পদ্মফুল ফুটিয়েছে পুরসভা।এছারা বাগান বাড়ির ভিতরের আগাছার জঙ্গল পরিস্কার করে সেখানে থাকা আম,জাম,কাঁঠাল,বকুল তাল গাছের মতো প্রায় শতাধিক গাছের গোড়া বাঁধিয়ে মাটি ভরে দেওয়া হয়েছে।এছাড়া বাগান বাড়ির পশ্চিমদিকে গড়া হয়েছে মুক্ত মঞ্চ।এই মুক্ত মঞ্চ আগে ছিল না।বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষথানের জন্য মুক্ত মঞ্চ গড়েছে পুরসভা।এছাড়া গেটের বামদিকে পুরনো ভাড়ার ঘরের সংস্কার করা হয়েছে।তুলসী মঞ্চ কে কে আগের অবস্থায় ফেরানো হয়েছে।বাগান বাড়ির ভিতরে প্রতীকী একটি ফিটন গাড়ি রাখতে চায় পুরসভা।ঘড়ায় টানা সেই ফিটন গাড়ি করেই কলকাতা থেকে অবনীন্দ্রনাথ কোন্নগরের বাগান বাড়িতে আসতেন। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, শহরবাসী কে সঙ্গে নিয়ে অনেক লড়াই সংগ্রাম করে হেরিটেজ সম্পত্তি কে রক্ষা করতে পেরেছি। মাস কয়েক ধরে যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় সংস্কারের কাজ চলছে।আমরা জানুয়ারী মাসেই ভবনের উব্দোধন করব।ইতিমধ্যে আমরা রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি এখানে একটি সরকারী আর্ঠ কলেজ খোলার জন্য।পাশাপাশি মূল ভবনে একটি অবনীন্দ্রনাথের সংগ্রহশালা করার জন্য।এছারা সামনের দিকে যে ফাঁকা জমি রয়েছে সেখানে ভবিষ্যতে ছাত্রাবাস করার লক্ষ্য রয়েছে।তবে বাড়ির পূর্ন সংস্কারের ব্যায় ভার পুরসভা বহন করেছে।এবিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গোটা দেশ বাসীর কাছে একটা সেন্টিমেন্ট।অনেক কষ্ট করে মনিষীর স্মৃতি বিজরিত বাড়ি বাঁচানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে সেখানে অবন ঠাকুরের নামে একটি আর্ট কলেজ করার। আসা করছি আমাদের স্বপ্ন সার্থক হবে।